লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন।—ছবি রয়টার্স।
ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচন নিয়ে এ বার মুখ খুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সরাসরি বললেন, লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ‘অত্যন্ত খারাপ’ পছন্দ। আর তাঁর নিজের প্রিয় বরিস জনসনের হয়ে সওয়াল করে ট্রাম্প বললেন, ‘‘এই সময়ে দাঁড়িয়ে ও-ই (বরিস) সব চেয়ে উপযুক্ত।’’ বরিসকে ‘ব্রিটেনের ট্রাম্প’ বলে আখ্যাও দিয়েছেন তিনি।
একটি রেডিয়ো চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে গত কাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট শো-এর উপস্থাপক এবং ব্রেক্সিট পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজকে বলেছেন, ‘‘আপনার উচিত বরিস জনসনের সঙ্গে মিলে দারুণ কিছু একটা করা।’’ ট্রাম্পের মতে, ডিসেম্বর মাসে সাধারণ নির্বাচনে বরিস-নাইজেল দু’জনে মিলে কিছু করলে সেটা একটা অপ্রতিরোধ্য শক্তি হবে।
বিরোধী নেতা করবিন অবশ্য ট্রাম্পের মন্তব্য শুনে ক্ষুব্ধ হয়ে বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ব্রিটেনের নির্বাচনে নাক গলানোর চেষ্টা করছেন। নিজের বন্ধু জনসনের হয়ে প্রচার করছেন। ট্রাম্প অবশ্য বরিসের ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ছেড়ে কথা বলেননি। তাঁর বক্তব্য, বরিস ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার যে চুক্তি করেছেন, তাতে আমেরিকার ব্রিটেনের সঙ্গে পারস্পরিক বাণিজ্য চুক্তিতে অসুবিধে হতে পারে। ট্রাম্প এই সূত্রে ওই শো-এ নাইজেল ফারাজকে বলেন, ‘‘আমরা ব্রিটেনের সঙ্গে বাণিজ্য করতে চাই। ওরাও চায়।’’ এ বছরের অগস্টে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দেন, ব্রিটেনের সঙ্গে বড় কোনও বাণিজ্য চুক্তি হতে চলেছে। কিন্তু ট্রাম্পের এখনকার অবস্থান দেখে ব্রিটেন সরকার আজ সকালে ফের ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চুক্তি নিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছে। ডাউনিং স্ট্রিটের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘আইন, বাণিজ্য, অর্থ এবং সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতেই থাকবে— প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ব্রেক্সিট চুক্তি অন্তত সে আশ্বাসই দিচ্ছে।’’ তবে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, লেবার পার্টি বলে বেড়াচ্ছে, ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা মার্কিন বিনিয়োগকারীদের হাতে বেচে দিচ্ছেন বরিস। আর তাই ট্রাম্প ঢালাও প্রশংসা করছেন বরিসের।
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এক সময়ে বলেছিলেন, ইইউ থেকে বেরিয়ে গেলে বাণিজ্যিক লেনদেনে ব্রিটেন গিয়ে দাঁড়াবে শেষ দিককার সারিতে। সে বারও ব্রিটিশ ভোটাররা ওবামার মন্তব্য ভাল ভাবে নেননি। যথেচ্ছ সমালোচনাও হয়েছিল। শেষে দেখা গিয়েছিল ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষেই সায় দিয়েছে ব্রিটেন।
ভোট ১২ ডিসেম্বর। আপাতত সে দিকেই তাকিয়ে ব্রিটেন।