শিল্পকর্মের সামনে জসলিন। —নিজস্ব চিত্র।
এই প্রথম ‘টার্নার’ পুরস্কার পেলেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলা। লন্ডনের টেট ব্রিটেন গ্যালারিতে অভিনেতা জেমস নর্টন সম্প্রতি ব্রিটেনের বাসিন্দা, শিখ শিল্পী জসলিন কউরের হাতে নগদ ২৫ হাজার পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় ২৭ লক্ষ টাকারও বেশি) মূল্যের এই পুরস্কার তুলে দেন। শিল্পজগতের অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কারের জন্য এ বারের কনিষ্ঠতম প্রতিযোগী ছিলেন ৩৮ বছর বয়সি জসলিন।
সম্প্রতি গ্লাসগোর ট্রামওয়েতে এক প্রদর্শনীতে ওই শিল্পীর শিল্পকর্ম তুলে ধরা হয়েছিল। জসলিনের শিল্পকর্মটি একটি ইনস্টলেশন, নাম ‘অল্টার অল্টার’। একটি লাল রঙের ফোর্ড এসকর্ট গাড়ি, সেটির উপরে কুরুশের কাজ করা বিশাল সাদা এক ঢাকা। গাড়ির ভিতরে নানাবিধ জিনিস— পারিবারিক ফটোগ্রাফ, ক্যাসেট রেকর্ডার, বব মার্লে ও নুসরত ফতে আলি খানের গানের সিডি, পুজোয় ব্যবহৃত ঘণ্টা, নরম পানীয়ের ক্যান— যেগুলি মাধ্যমে শিখ সম্প্রদায়ের দৈনন্দিন জীবনযাপনের চিহ্ন ফুটিয়ে তুলেছেন জসলিন। তা ছাড়া, এই ইনস্টলেশনের অঙ্গ হিসেবে দেখানো হয়েছিল শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজনের নানা প্রতিকুলতার সঙ্গে লড়াইয়ের চিত্র। ছিল তাঁর শৈশবের নানা স্মৃতিও। প্রদর্শনীর মাধ্যমে তুলে ধরা হয় ওই শিখ সম্প্রদায়ের মানুষের সংস্কৃতি ও রাজনীতির প্রসঙ্গও। এই ‘শিকড়ের সন্ধান’ই মুগ্ধ করে বিচারকেদের।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই শিল্পীর প্রপিতামহ ১৯৫০ সালে পঞ্জাব ছেড়ে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো-তে বসবাস শুরু করেন। সেখানেই শুরু করেন নিজের ব্যবসাও। সেই সময়ে জসলিনের পরিবার ও এ দেশে বসবাসকারী শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন কী ভাবে বিদেশি সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নিতেন, তার ছবিও নিজের শিল্পের মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন জসলিন। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে জসলিন ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধের বিরুদ্ধেও বার্তা দিয়েছেন। প্যালেস্টাইনিদের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, যে কোনও প্রতিবাদ তৈরি হয় শিল্প ও শিল্পীদের দ্বারা।