ইজ়রায়েলি হামলায় লন্ডভন্ড দক্ষিণ লেবাননের বিস্তীর্ণ অংশ। ছবি: রয়টার্স।
আর চোরাগোপ্তা হামলা নয়। এ বার রীতিমতো আগাম ঘোষণা করেই লেবাননে ঢুকে অভিযান শুরু করল ইজ়রায়েল। মঙ্গলবার ভোরে ইজ়রায়েলি সেনার তরফে জানানো হয়, দক্ষিণ লেবাননে হিজ়বুল্লার ঘাঁটিতে নিয়ন্ত্রিত হামলা চালানো হবে। মূলত স্থলপথে হওয়া এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন নর্দান অ্যারো’। ইজ়রায়েলি সেনা সূত্রে খবর, হামাসের মতো হিজ়বুল্লারও গোপন সুড়ঙ্গগুলিকে নজরে রাখা হচ্ছে। ইরানের মদতপুষ্ট লেবাননের সশস্ত্র সংগঠনটির ভূগর্ভস্থ ‘নেটওয়ার্ক’ ধ্বংস করতে চাইছে ইজ়রায়েল।
‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মঙ্গলবার সকালেই হিজ়বুল্লার সুড়ঙ্গে ঢুকে পড়েছে ইজ়রায়েলি সেনা। ওই প্রতিবেদন অনুসারে, ইজ়রায়েলের সীমান্ত পেরিয়ে দক্ষিণ লেবানন ধরে সুড়ঙ্গগুলিতে এগোচ্ছে সেনা। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ লেবাননের হিজ়বুল্লা ঘাঁটি দাহিয়ে থেকে সকলকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইজ়রায়েল। ইজ়রায়েল স্থল অভিযান শুরুর ঘোষণা করার পরেই আমেরিকা বন্ধুরাষ্ট্রের পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন জানিয়েছেন, ইজ়রায়েলের ‘আত্মরক্ষার অধিকারকে’ সমর্থন করছে পেন্টাগন।
গত শুক্রবারই ইজ়রায়েলি হামলায় নিহত হন হিজ়বুল্লা প্রধান হাসান নাসরাল্লা। রবিবার তেল আভিভের তরফে দাবি করা হয়, হামলায় মৃত্যু হয়েছে ইরানের মদতপুষ্ট সশস্ত্র সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের উপপ্রধান নাবিল কউকের। গত এক সপ্তাহে ইজ়রায়েলের হামলায় হিজ়বুল্লার সাত কমান্ডার নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইজ়রায়েল। হামলার জেরে গত দু’সপ্তাহে লেবাননে ১০০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার লেবাননের দক্ষিণ প্রান্তবর্তী শহর সিদোনে আকাশপথে হামলা চালায় ইজ়রায়েল। সোমবার ভোরে হামলা চালানো হয় লেবাননের রাজধানী বেইরুটের মধ্যবর্তী অংশে।
লেবাননের পাশাপাশি ইরানের মদতপুষ্ট আর এক সশস্ত্র গোষ্ঠী, ইয়েমেনের হুথিকেও নিশানা করছে ইজ়রায়েল। রবিবার ইজ়রায়েলি সেনা জানিয়েছে, ইয়েমেনের হোদেইদা শহরে হুথি নিয়ন্ত্রিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং সমুদ্রবন্দরে হামলা চালানো হয়েছে। গত শনিবার ইজ়রায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল হুথি। ঠিক সেই সময়ই আমেরিকা সফর শেষ করে ওই বিমানবন্দরে অবতরণ করেন নেতানিয়াহু। তবে তাঁকে নিরাপদেই বিমানবন্দর থেকে বার করে আনা হয়।