জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ। —ফাইল ছবি।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানিতে উঠে এল ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্ব। জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ এবং ‘জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টর্স’-এর আইনজীবী করুণা নন্দী উভয়ের মুখেই উঠে আসে একাংশের প্রভাব খাটানোর আশঙ্কা। ইন্দিরা আদালতে জানান, তদন্তের আওতায় থাকা সাত জন এখনও আরজি কর হাসপাতালে কর্মরত। যে হেতু তাঁরা এখনও হাসপাতালে কাজ করছেন, সে ক্ষেত্রে তাঁরা প্রভাব খাটাতে পারেন বলে সন্দেহ করছেন ইন্দিরা। আইনজীবীর আবেদন, ডাক্তারদের মনে আস্থা ফেরাতে ওই সাত জনকে সাময়িক ভাবে নিলম্বিত করা হোক। তিনি প্রশ্ন করেন, “যদি এঁরা এখনও ক্ষমতায় বসে থাকেন, তা হলে আমরা (জুনিয়র ডাক্তারেরা) কী ভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আশা করতে পারি?”
জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী আরও জানান, অকুস্থলে গিয়েছিলেন এমন চার জনের নাম তাঁদের কাছ রয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’জনের নাম সলিসিটর জেনারেলকে জানানো হয়েছে। বাকি দু’জনের নাম মুখবন্ধ খামে জমা দেওয়া হয়েছে। আইনজীবী করুণা নন্দীও সোমবার আদালতে ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্বের কথা তুলে ধরেন। তিনিও জানান, সিবিআই তদন্তের আওতায় রয়েছে এমন একাধিক ব্যক্তি এখনও ক্ষমতায় রয়েছেন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের সাময়িক ভাবে নিলম্বিত করার আর্জি জানান করুণা। সিবিআইয়ের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাও জানান, তদন্তকারী সংস্থার জমা দেওয়া রিপোর্টেও তাঁরা এই বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
শুনানির এক পর্যায়ে জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী, চিকিৎসক সংগঠনের আইনজীবী এবং সিবিআই আইনজীবী— তিন পক্ষ এই বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরে। সেগুলি শোনার পর প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় সলিসিটর জেনারেলের কাছে জানতে চান, তদন্তের আওতায় থাকা কারা এখনও আরজি করে কর্মরত রয়েছেন। প্রধান বিচারপতি এও জানান, শেষ পর্যন্ত এই বিষয়ে পদক্ষেপ করতে হবে রাজ্য সরকারকেই। তাই যদি এই সংক্রান্ত কোনও তথ্য থাকে, তা রাজ্যকে জানানোই সঠিক হবে বলে মন্তব্য প্রধান বিচারপতির। কারা কারা তদন্তের আওতায় রয়েছেন সেই তালিকা আদালতে জমা দেওয়ার জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দেন তিনি।
তখনই রাজ্যের আইনজীবী জানান, ইতিমধ্যে পাঁচ জনকে নিলম্বিত করা হয়েছে। সিবিআই তদন্তের আওতায় থাকা ব্যক্তিদের নামের তালিকা দিলে রাজ্য সরকারও পদক্ষেপ করবে বলে আশ্বস্ত করেন রাজ্যের আইনজীবী। তিনি জানান, কেউ যত প্রভাবশালীই হোন, সিবিআই তাঁদের নামের তালিকা দিলে পদক্ষেপ করা হবে। পদক্ষেপ করার ক্ষেত্রে রাজ্যের কোনও সমস্যা নেই বলেও জানান তিনি। সেই কথা শুনে প্রধান বিচারপতি জানান, তদন্তের আওতায় থাকা ব্যক্তিদের নাম সিবিআই রাজ্যকে দিলে, তার প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ করতে হবে। আইন মেনেই পদক্ষেপ করতে হবে রাজ্যকে।