—ফাইল চিত্র ।
দক্ষিণের পর এ বার উত্তর। গাজ়া ভূখণ্ডের উত্তরে প্রবেশ করতে শুরু করেছে ইজ়রায়েলি সেনা। এমনটাই জানাল ইজ়রায়েলের সামরিক বাহিনী ‘ইজ়রায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)’। আইডিএফ জানিয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী এবং সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে তারা গাজ়া ভূখণ্ডের উত্তরে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। অন্য দিকে, ইরান-সমর্থিত একটি সশস্ত্র বাহিনীর দাবি, দু'টি আত্মঘাতী ড্রোন দিয়ে উত্তর ইরাকে আমেরিকার সেনাদের একটি ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে তারা। আমেরিকার প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইরানের দু’টি সশস্ত্র গোষ্ঠীর ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ওয়াশিংটনও। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশই এই হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছেন লয়েড। পাশাপাশি, বিমান প্রতিরক্ষা জোরদার করতে অতিরিক্ত প্রায় ৯০০ সেনা পশ্চিম এশিয়ায় পাঠানো হয়েছে বলেও ওয়াশিংটন জানিয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইজ়রায়েল-হামাস সংঘাতের কারণে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে গাজ়া। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইজ়রায়েলের হামলায় গাজ়া ভূখণ্ডে এখনও পর্যন্ত সাত হাজার জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে! ‘নিহত’দের নাম, বয়স, লিঙ্গ এবং পরিচয়পত্র প্রকাশ্যে এনে তেমনটাই দাবি করেছে প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। হামাসের দাবি, ৭ অক্টোবর থেকে ইজ়রায়েলি হানায় গাজ়ায় মোট ৭,০২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে শিশুর সংখ্যাই ২,৯১৩। হামাসের তরফে, মৃতদের মধ্যে ৬,৭৪৭ জনের নামতালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ২৮১ জনের মৃতদেহ এখনও শনাক্ত করা যায়নি বলে সশস্ত্র গোষ্ঠীর দাবি। অন্য দিকে ইজ়রায়েলের দাবি, গাজ়াতে এখনও পর্যন্ত ১৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে ইজ়রায়েলের সেই দাবিকে নস্যাৎ করে নতুন তালিকা প্রকাশ করেছে হামাস। এই পরিস্থিতিতে
গাজ়ার উপর ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করেই চলেছে ইজ়রায়েল। ইজ়রায়েলি ফৌজ বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, গাজ়ায় রাতভর আকাশপথে হামলা চালিয়েছে তারা। স্থলপথেও সাঁজোয়া বাহিনী আক্রমণ চালায়। নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত করে করে তারা বোমা ফেলেছে। তাতেই মৃত্যু হয়েছে হামাসের অন্যতম শীর্ষ যোদ্ধা হাসানের। গাজ়ায় হামাসের পণবন্দি হয়ে এই মুহূর্তে রয়েছেন ২২৪ জন ইজ়রায়েলি নাগরিক। এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে নেতানিয়াহুর সেনা।
গত ৭ অক্টোবর প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইজ়রায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালায়। সেই হামলায় বহু ইজ়রায়েলি নাগরিকের মৃত্যু হয়। অনেককে পণবন্দি করে নিয়ে যায় হামাস। অতর্কিত এই হামলার পরেই হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন নেতানিয়াহু। তার পর থেকে ইজ়রায়েলের প্রত্যাঘাতে মৃত্যুমিছিল দেখছে গাজ়া। যুদ্ধে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দেশগুলি ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে। ভারতকেও পাশে পেয়েছে ইজ়রায়েল। তবে হামাসকে সহযোগিতা করছে পশ্চিম এশিয়ার শক্তিশালী দেশ ইরান। লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হেজ়বুল্লাও হামাসের সমর্থনে অস্ত্র ধরে ইজ়রায়েলে হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।