Cyclone Dana in West Bengal

কলকাতায় ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা ছিল, শেষ পর্যন্ত হয়েছে ৪০! বাংলাকে বাঁচাল কোন ‘বিপত্তারণ’?

ওড়িশায় ঘূর্ণিঝড়ের ‘ল্যান্ডফল’-এর সময় কলকাতায় ঝোড়ো হাওয়ার সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার। মাঝরাত থেকে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট ছিল না।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:০০
Share:

ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন কলকাতার রাস্তা। ছবি: পিটিআই।

‘প্রবল’ ঘূর্ণিঝড় হয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করেছে ‘ডেনা’। ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামরার মাঝে ‘ল্যান্ডফল’-এর সময় ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি এবং তীব্রতা যথেষ্ট ছিল। তবে তার প্রভাব প্রতিবেশী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের উপর তেমন পড়েনি। কেন? এখন এই প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন আবহবিদেরা। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে যেখানে ‘ল্যান্ডফল’ হয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের, তার থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে কলকাতায় ঝোড়ো হাওয়ার গতি ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার। যদিও পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় বইতে পারে কলকাতায়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ১২টা নাগাদ ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামরার মাঝে স্থলভাগে প্রবেশ করেছে ‘ডেনা’। সে সময় তার সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ১২০ কিলোমিটার। ঘণ্টায় গতি ছিল ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। ওড়িশার উপকূলে ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের সঙ্গে ভারী বৃষ্টিও হয়েছে। ‘ডেনা’র প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টি চললেও ঝড়ের দাপট কম ছিল। ওড়িশায় ঘূর্ণিঝড়ের ‘ল্যান্ডফল’এর সময় কলকাতায় ঝোড়ো হাওয়ার সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার। মাঝরাত থেকে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টি চললেও ঝোড়ো হাওয়ার দাপট ছিল না। এর আগে ‘ইয়াস’ বা ‘আয়লা’ ঘূর্ণিঝড়ের সময় কলকাতাতেও ছিল ঝড়ের দাপট। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান সোমনাথ দত্ত জানিয়েছেন, একটি ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে অন্য ঘূর্ণিঝড়ের মিল খুঁজতে গেলে চলবে না। সব ঘূর্ণিঝড়েরই নিজস্ব কিছু বৈচিত্র রয়েছে। ‘প্রবল’ হওয়া সত্ত্বেও কেন এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেন বাংলায় পড়েনি, তা নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু করেছেন আবহবিদেরা। এই নিয়ে তথ্য সংগ্রহও করা হচ্ছে।

আবহবিদদের একাংশ মনে করছেন, ‘ডেনা’র ব্যপ্তি কম ছিল। অর্থাৎ, এই ঘূর্ণিঝড় স্বল্প পরিসরের মধ্যে আবদ্ধ ছিল। ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপ্তি বেশি হলে তার প্রভাবও বেশি হয়। ‘ডেনা’র ক্ষেত্রে তা হয়নি। মনে করা হচ্ছে, এর প্রভাব বেশি দূর পর্যন্ত বিস্তৃত না হওয়ার আর একটি কারণ হল ‘অ্যান্টিসাইক্লোন’। এই মুহূর্তে এই অঞ্চলে দু’টি ‘অ্যান্টিসাইক্লোন’ সক্রিয় রয়েছে। একটি মধ্য ভারতে এবং অন্যটি মায়ানমার থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এই ‘অ্যান্টিসাইক্লোন’-এর প্রভাবে ‘ডেনা’র গতিপথে শুষ্ক হাওয়া প্রবেশ করেছে। এই শুষ্ক হাওয়ার কারণে দ্রুত শক্তি হারাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়। এই প্রসঙ্গে সোমনাথ জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ ল্যান্ডফলের পরেও নিজের শক্তি বজায় রেখেছিল। দুর্বল হতে তার সময় লেগেছিল। ‘ডেনা’ ওড়িশা উপকূল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশের পর পরই দুর্বল হতে শুরু করে। এই কারণেই তার প্রভাব থেকে রক্ষা পেয়েছে প্রতিবেশী বাংলা। তবে এ সবের পাশাপাশি, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বিচার করতে গেলে সে যেখানে রয়েছে, সেখানকার বায়ুস্তর, জলীয় বাষ্পের পরিমাণও বিবেচনা করতে হবে। তার পরেই জানা যাবে, কী ভাবে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব থেকে রক্ষা পেল পশ্চিমবঙ্গ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement