হিজ়বুল্লা নেতা হাশেম সফিদ্দিন। ছবি: রয়টর্স।
লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজ়বুল্লা নেতা হাশেম সফিদ্দিন মৃত। এমনই দাবি করল ইজ়রায়েলি সেনা। হিজ়বুল্লা প্রধান সৈয়দ হাসান নাসরাল্লার মৃত্যুর পর তিনিই ইরানের সমর্থনপুষ্ট সশস্ত্র এই গোষ্ঠীকে নেতৃত্ব দেবেন বলে মনে করা হচ্ছিল। মঙ্গলবার ইজ়রায়েলের সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে, সপ্তাহ তিন আগে লেবাননের রাজধানী বেরুটের দক্ষিণ দিকের শহরতলিতে হিজ়বুল্লার গোয়েন্দা ঘাঁটিতে যে রকেট হামলা চালানো হয়েছিল, তাতেই মৃত্যু হয় সফিদ্দিনের। তাঁর মৃত্যুর খবর এই প্রথম নিশ্চিত করল ইজ়রায়েল। যদিও হিজ়বুল্লার তরফে এই খবর নিশ্চিত করে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
চলতি মাসের গোড়ার দিকে হিজ়বুল্লার গোয়েন্দা ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল ইজ়রায়েল। দাবি করা হয়েছিল, সেই সময় ওই ঘাঁটিতে মাটির নীচে থাকা গোপন একটি বাঙ্কারে অন্য হিজ়বুল্লা নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন সফিদ্দিন। ওই বাঙ্কারেই হামলা চালানো হয়। সেই হামলাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করল ইজ়রায়েলি সেনা।
লেবাননের দক্ষিণ, পূর্ব এবং বেরুটের দক্ষিণ দিকের শহরতলিতে ছড়িয়ে রয়েছে হিজ়বু্ল্লার ঘাঁটি। বিগত কয়েক মাস ধরে বেছে বেছে সেই সব ঘাঁটিতেই হামলা করছে ইজ়রায়েলি সেনা। হামাসের সঙ্গে ইজ়য়ালের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে হিজ়বুল্লা। হামাসের সমর্থনে ইজ়রায়েলে কয়েকটি হামলাও চালায় তারা। তার পর থেকেই ইজ়রায়েলের নজরে লেবানন। একের পর এক হামলায় লেবাননের বিস্তীর্ণ এলাকা তছনছ করেছে ইজ়রায়েলি সেনা। সবচেয়ে বড় আঘাত হেনেছিল গত ২৭ সেপ্টেম্বর। বেরুটের দক্ষিণ দিকের শহরতলিতে হিজ়বুল্লার ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইজ়রায়েল। দাবি, সেই সময় ওই বাঙ্কারেই ছিলেন নাসরল্লা। সেই হামলাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। কয়েক দিনের ব্যবধানে আবারও বেরুটে রকেট হামলা চালায় ইজ়রায়েলি সেনা।
নাসরাল্লা এবং সফিদ্দিন প্রায় একই সময়ে হিজ়বুল্লা গোষ্ঠীতে শামিল হয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি ওই সংগঠনের কার্যনির্বাহী কাউন্সিলের প্রধান ছিলেন। তাঁকেই হিজ়বুল্লার প্রধান হিসাবে ভাবা হয়েছিল। সংগঠনের রাজনৈতিক দিকটিও দেখতেন সফিদ্দিন। যুক্ত ছিলেন জ়িহাদ কাউন্সিলের সঙ্গেও। নাসরাল্লার সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক রয়েছে তাঁর। দু’জনকে দেখতেও অনেকটা একই রকম। ২০১৭ সালে আমেরিকা সফিদ্দিনকে ‘সন্ত্রাসী’ তালিকাভুক্ত করেছিল। তবে তার পরও দমানো যায়নি তাঁর কার্যকলাপ। প্রায়শই তাঁকে আমেরিকার বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে। এমনকি ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধের আবহে প্যালেস্টাইনের পাশে দাঁড়িয়ে হুমকি দিতেও শোনা গিয়েছে সাফেদ্দিনকে। গত জুনে এক হিজ়বুল্লা কমান্ডরের মৃত্যুর পরই সরাসরি ‘যুদ্ধে’র হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি।