ইব্রাহিম রইসি। ছবি: রয়টার্স।
চপার ভেঙে মৃত্যু হল ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসির। মারা গিয়েছেন চপারে রইসির সহযাত্রী তথা সে দেশের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আমিরাবদোল্লাহিয়ানও। ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থার তরফে দু’জনের মৃত্যুর খবর এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে জানানো না হলেও, সে দেশের প্রশাসনিক আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে এই খবর জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
রইসির মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই একটি শোকবার্তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান, ‘এই দুঃখের সময়ে’ ভারত ইরানের পাশে রয়েছে। সোমবার সকালে নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলের একটি পোস্টে মোদী লেখেন, “ইরানের ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট রইসির বেদনাদায়ক মৃত্যুতে আমি গভীর ভাবে শোকাহত। ভারত-ইরান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করতে তাঁর অবদান সর্বদা মনে থাকবে। তাঁর পরিবার এবং ইরানের মানুষকে আমি আমার অন্তরের সমবেদনা জানাই।”
রবিবারই জানা গিয়েছিল যে, পর্বতে ধাক্কা খেয়ে ভেঙে পড়েছে রইসির চপার। ওই চপারেই ছিলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী। ইরান প্রশাসনের এক শীর্ষ পদাধিকারী সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানান, একটি পার্বত্য অঞ্চল পেরিয়ে যাওয়ার সময় চপারটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। প্রবল বৃষ্টি আর ঘন কুয়াশার জন্য দুর্ঘটনাস্থলে দৃশ্যমানতা খুব কম ছিল বলেও জানান ওই সরকারি আধিকারিক। সেই সরকারি আধিকারিককে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানায়, ইরানের প্রেসিডেন্ট এবং সে দেশের বিদেশমন্ত্রীর অবস্থা ‘আশঙ্কাজনক’। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আর এক সরকারি আধিকারিক বলেছিলেন, “আমরা এখনই হাল ছাড়ছি না। তবে যেখানে চপারটি ভেঙে পড়েছে, সেই এলাকাটা আমাদের চিন্তা বাড়িয়ে তুলছে।”
এর আগে রয়টার্স জানিয়েছিল, প্রেসিডেন্ট রইসি যে কপ্টারে ছিলেন, সেটি পাওয়া গিয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলের ছবিও দেয় সংবাদ সংস্থাটি। তাতে দেখা যায়, কুয়াশাঘেরা পাহাড়ের বুকে হেলিকপ্টারের ভাঙা অংশ পড়ে রয়েছে। একাধিক গাড়ি ঘোরাফেরা করছে। হেঁটে দুর্ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। ভেঙে পড়া চপারটির অবস্থাও শোচনীয়। সেটি দুর্ঘটনার অভিঘাতে তুবড়ে গিয়েছে। চপারটিতে আগুনও ধরে গিয়েছিল। পোড়া অবস্থায় মেলে একাধিক অংশ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চপারের কেবিন।
ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রইসি আজ়ারবাইজান সফরে বেরিয়েছিলেন। সঙ্গী ছিলেন বিদেশমন্ত্রী। যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটে, সেই স্থানটি আজ়ারবাইজানের সীমান্তে অবস্থিত শহর জোলফার কাছাকাছি। জায়গাটি ইরানের রাজধানী থেকে অন্তত ৬০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে। সরকারি সংবাদমাধ্যমের তরফে এ-ও জানানো হয়েছিল যে, খুব দ্রুত দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ইরান প্রশাসনের একটি সূত্র মারফত অবশ্য জানা গিয়েছিল, ভারী বৃষ্টি এবং ঘন কুয়াশার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।