পুলিশি হেফাজতে খ্যাতনামী ইরানের শেফ মেহরশাদ শাহিদিকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ। — ফাইল ছবি।
এক দিন পরেই ২০ বছরে পা দিতেন তিনি। তার আগেই ইরানের খ্যাতনামী শেফ মেহরশাদ শাহিদিকে পিটিয়ে খুন করল রেভলিউশনারি গার্ড ফোর্স বলে অভিযোগ। হিজাব-বিরোধী আন্দোলনে পথে নেমেছিলেন শাহিদি। তখনই তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে হেফাজতে খুন বলে অভিযোগ। শনিবার শাহিদির শেষকৃত্যের সময় প্রতিবাদে পথে নামেন হাজার হাজার মানুষ।
১৯ বছর বয়সেই দারুণ জনপ্রিয় হয়েছিলেন শাহিদি। তাঁকে ইরানের ‘জেমি অলিভার’ বলা হত। আরক শহরে পথে নেমে প্রতিবাদের সময় তাঁকে তুলে নিয়ে যায় ইরানের নিরাপত্তারক্ষী। হেফাজতে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারে বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, খুলিতে আঘাতের কারণে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। শাহিদির পরিবার অভিযোগ করেছে, তাদের ছেলের হৃদ্রোগে মৃত্যু হয়েছে বলার জন্য চাপ দিচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসন।
ইরানের প্রশাসন অবশ্য শাহিদির মৃত্যুর দায় এড়িয়ে গিয়েছে। ইরানের প্রধান বিচারপতি আবদোলমেহদি মৌসাভি স্পষ্টই জানিয়েছে, শাহিদির দেহে হাত, পা বা খুলি ভাঙার কোনও চিহ্ন মেলেনি।
যদিও শাহিদির মৃত্যুর নিয়ে পুলিশ এবং প্রশাসনের দিকেই আঙুল তুলেছেন অনেকে। চিকিৎসক নিনা আনসারি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘মেহরশাদ শাহিদি বুট রেস্তরাঁর একটি প্রতিভাশালী শেফ ছিলেন। ইরানে ওঁকে ভয়ঙ্কর ভাবে খুন করা হয়েছে। পরের দিন ওঁর ২০ বছরের জন্মদিন ছিল। আমরা কখনও ভুলব না। কখনও ক্ষমা করব না।’’
অন্য এক জন নিজেকে শাহিদির তুতো ভাই বলে দাবি করেছেন। লিখেছেন, ‘‘ইরানে খুন হয়েছেন ১৯ বছরের মেহরশাদ শাহিদি, আমার তুতো ভাই। কাজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। তাতে তিনি বাইক থেকে পড়ে যান এবং অপহৃত হন। পরে পরিবারকে ডেকে ওঁর দেহ নিয়ে যেতে বলা হয়।’’
ঠিকমতো হিজাব পরেছিলেন না বলে ইরানের নীতি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন ২২ বছরের তরুণী মাহসা আমিনি। হেফাজতে মৃত্যু হয় তাঁর। সেই থেকে প্রতিবাদের আগুন জ্বলছে ইরানে। ইরানের নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে খুন হয়েছেন শয়ে শয়ে প্রতিবাদী। যদিও ইরানের দাবি, এ সবের নেপথ্যে রয়েছে আমেরিকার হাত।