ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাত। ছবি রয়টর্স।
ইজ়রায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা ছাড়া এখনও পর্যন্ত ইরান তেমন কোনও আক্রমণে যায়নি। সিরিয়ার দামাস্কাসে ইরানি দূতাবাসে ইজ়রায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র বিমান হামলার ‘জবাব’ দিয়েছিল, এমনই দাবি করেছিল তেহরান। তার পর থেকে দু’পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে সরাসরি হামলার পথে হাঁটেনি। তবে ইজ়রায়েল যদি আবার আক্রমণ করে, তবে ছেড়ে কথা বলবে না ইরান, হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন সে দেশের প্রধান আয়াতুল্লাহ আলি খোমেনেইয়ের উপদেষ্টা কামাল খাররাজ়ি। শুধু তা-ই নয়, পরমাণু বোমার হামলারও প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে রাখল তেহরান।
গত এপ্রিল থেকেই দু’দেশের মধ্যে চাপা উত্তেজনা চলছিল। হামলা-পাল্টা হামলা চালিয়েছে দু’দেশই। হামাসের সঙ্গে সংঘাতের মধ্যেই ইরানের সঙ্গেও ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার। তবে এখনও পর্যন্ত দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। যদিও দু’দেশই একে অপরকে মেপে চলছে বলেই মনে করছেন অনেকে।
ইরানের এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কামাল দাবি করেছেন, ‘‘আমাদের পারমানবিক বোমা তৈরি করার কোনও পরিকল্পনা এখনই নেই। তবে ইরানের অস্তিত্ব যদি সঙ্কটের মুখে পড়ে, তবে নিজেদের নীতি থেকে সরে আসতে বাধ্য হব।’’ অর্থাৎ প্রয়োজনে পারমানবিক হামলাও চালাতে পারে ইরান, এমনই হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন কামাল।
ইরান বরাবারই দাবি করে আসছে, পারমানবিক বোমা তৈরির ব্যাপারে তাদের কোনও পরিকল্পনা নেই। তারা কেবল শান্তিপূর্ণ পারমানবিক কর্মসূচি চালাচ্ছে বলে দাবি করা হয়। তবে পশ্চিমি দেশগুলি সন্দেহ প্রকাশ করে, শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচির আড়ালে তেহরান পারমানবিক বোমা তৈরি করছে। সে ব্যাপারে তারা অনেকটাই অগ্রসর হয়েছে।
২০১৯ সালে আয়াতুল্লাহ পরমাণু অস্ত্র তৈরির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। কিন্তু ২০২১ সালে ইরানের তৎকালীন গোয়েন্দামন্ত্রী হুঁশিয়ারির সুরে বলেছিলেন, ‘‘পশ্চিমের দেশগুলি ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’’ তার পর থেকেই ইরানের পারমানবিক বোমা তৈরির ব্যাপার নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছে পশ্চিমের দেশগুলি। কামালের দাবি নতুন করে সেই জল্পনা উস্কে দিয়েছে। ইসফাহান এলাকাতেই রয়েছে নাতাঞ্জ-সহ ইরানের কয়েকটি পরমাণু গবেষণা এবং ইউরেনিয়াম পরিশোধন কেন্দ্র।
উল্লেখ্য গত ১৩ এপ্রিল মধ্যরাতে ইজ়রায়েলে প্রায় ২০০টি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান সেনা। যদিও আমেরিকা এবং জর্ডনের মতো দেশের সহায়তায় শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থার সাহায্য প্রায় ৯৯ শতাংশ ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রকে প্রতিহত করে ইজ়রায়েল। ফলে বিশেষ ক্ষয়ক্ষতির ঘটেনি। তার আগে গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে ইরানি দূতাবাসে ক্ষেপণাস্ত্র বিমানহানা চালিয়েছিল ইজরায়েল। তাতে নিহত হয়েছিলেন ইরানের কয়েক জন কূটনীতিক এবং সামরিক প্রতিনিধি। তারই ‘জবাব’ দিতে ১৩ এপ্রিল রাতে হামলা চালানো হয় বলে তেহরানের দাবি।