তেহরানে খামেনেই। ছবি: রয়টার্স।
হিজাব-বিরোধী আন্দোলন শুরু হওয়ার পরে পরেই বিষপ্রয়োগে বহু স্কুলছাত্রীর মৃত্যুকে ঘিরে ইরানে ঘনিয়েছে রহস্য। সোমবারই ইরানের শীর্ষনেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনেই সরকারি গণমাধ্যমে বিষয়টির প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। বলেছেন, যারা এই কাজে যুক্ত তাদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, গত নভেম্বর থেকে প্রায় এক হাজার স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বিষপ্রয়োগে। বিষপ্রয়োগের হামলার সূচনা হয় কুম শহরে, ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে ২৫টি প্রদেশে। তবে, কাদের মস্তিষ্কপ্রসূত এই আক্রমণ, প্রশাসনের দাবি তা এখনও জানা যায়নি। কেউ কেউ দায়ী করছেন মেয়েদের শিক্ষা-বিরোধী ধর্মসংগঠনগুলিকে। তবে, হিজাব-বিরোধী আন্দোলনকারীদের দাবি, এর পিছনে রয়েছে প্রশাসনই। যেহেতু স্কুলছাত্রীরা এই প্রথম সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল, তাই তাদের সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা এটি।
কূটনীতিকদের দাবি, এই অভিযোগ যাতে আরও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে না পড়ে তাই হয়তো খামেনেইয়ের তরফে তড়িঘড়ি এই মন্তব্য।২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর নীতিপুলিশের হাতে হিজাব না পরার অপরাধে প্রাণ যায় ২২ বছরের মাহশা আমিনির। প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন ইরানের মহিলারা। স্কুলপড়ুয়া থেকে মাঝবয়েসি, সকলেই যোগ দেন হিজাব-বিরোধী আন্দোলনে। যোগ দেন পুরুষেরাও। সেই আন্দোলনের উপর কঠোর থেকে কঠোরতম নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে ইরানের প্রশাসন।
এ দিকে, যথাযথ পোশাক বিধি না মেনে চললে শাস্তির মুখে পড়তে হবে মেয়েদের, সোমবার এই বার্তা দিলেন ইরানের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি গোলামহোসেইন মোহসেনি এজাই। ইরানের জাতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, হিজাব-বিরোধী আন্দোলনের উপর কড়া বলপ্রয়োগের নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি বলেন, হিজাব না পরা আদতে ইসলামের মূল্যবোধকে অসম্মান করা। নিজের দেশের ধ্যানধারণাকে অসম্মান করা। তাই এই কাজ যারা করবে তাদের কঠিন শাস্তি পেতে হবে। পাশাপাশি তিনি আরও জানান, যারা এই মূল্যবোধকে অসম্মান করার চক্রান্তে জড়িত, তাদের রুখতে সব রকমের পদক্ষেপ করতে পারে প্রশাসন।