ইউক্রেনের যাত্রিবাহী বিমানের ধ্বংসাবশেষ। ছবি: এপি।
ইউক্রেনের যাত্রিবাহী বিমান লক্ষ্য করে দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল ইরানি সেনা। প্রাথমিক তদন্তের পর জানাল ইরানের অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। সোমবার মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে ওই দুর্ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ইরান। রিপোর্টে বলা রয়েছে, ‘‘তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ইউক্রেনের ওই যাত্রিবাহী বিমানের দিকে দুটো টর-এম১ মিসাইল ছোড়া হয়েছিল।’’
তদন্ত রিপোর্টে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কথা জানানো ছাড়াও বিমানের ধ্বংসাবশেষ ইউক্রেনের হাতে তুলে দিতেও সম্মত হয়েছে ইরান। একটি বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জিলেন্সকি। দুর্ঘটনার পর ওই বিমানের ব্ল্যাক বক্সটি নিজেদের কাছে রাখার ইঙ্গিত দিয়েছিল ইরান। যদিও দুর্ঘটনার পর থেকেই তা ফেরতের দাবি জানিয়েছিল ইউক্রেন। সোমবার তা ফেরতের দাবিতে ফের এক বার মুখ খোলেন জিলেন্সকি। এর পর কিয়েভে গিয়ে প্রেসিডেন্ট জিলেন্সকির সঙ্গে সাক্ষৎ করেন ইরানের সড়ক ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী মহম্মদ ইসলামি। ওই বৈঠকে জিলেন্সকি দাবি করেন, ওই বিমানের ব্ল্যাক বক্সের উড়ান সংক্রান্ত তথ্যাদি উদ্ধার করার মতো প্রযুক্তিবিদ তাদের দেশে রয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ওই প্রযুক্তি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে কিছু দিনের মধ্যেই কিয়েভে যাবেন ইরানের প্রতিনিধিরা। গত কাল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের তরফে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বিমানের ধ্বংসাবশেষও ইউক্রেনের হাতে তুলে দিতে রাজি হয়েছে ইরান। পাশাপাশি, দুর্ঘটনায় নিহত পরিবার ও আহতদের ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়েও উঠে এসেছে ওই বৈঠকে।
আরও পড়ুন: যতই প্রতিবাদ হোক, সিএএ থাকবেই, মমতা-মায়াবতীকে বিতর্কে আহ্বান জানিয়ে হুঙ্কার অমিতের
আরও পড়ুন: বিশ্বের উন্নয়নকে নিম্নমুখী করছে ভারতের আর্থিক ঝিমুনি, মত আইএমএফের
চলতি মাসের গোড়ায় ইরানের সামরিক বাহিনীর কমান্ডার কাসেম সোলেমানির হত্যার পরই ওয়াশিংটনের সঙ্গে উত্তেজনার আবহ তৈরি হয় তেহরানের। ওই আবহে ৮ জানুয়ারি ইরানের ইমাম খোমেইনি বিমানবন্দর থেকে উ়ড়ানের কিছু ক্ষণ পরই ১৭৬ জন আরোহী নিয়ে ভেঙে পড়ে ইউক্রেনের বিমানটি। প্রথম দিকে একে দুর্ঘটনা মনে করা হলেও একটি বিবৃতিতে ইরান জানিয়ে দেয়, ‘অনিচ্ছাকৃত ভাবে’ ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভেঙে পড়ে বিমানটি। সে সময় ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলিকে ধ্বংসের লক্ষ্যেই ওই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল। তবে তা ‘ভুল করে’ ইউক্রেনের বিমানটিকে ধ্বংস করেছিল। ওই দুর্ঘটনার পর থেকে বিমানের ব্ল্যাক বক্স ফেরতের দাবিতে সরব হয় ইউক্রেন। তবে শেষ পর্যন্ত ইরান তাতে রাজি হবে কি না, এখন সেটাই দেখার।