জামিয়াত উলেমা-এ-ইসলাম ফজল-এর সমর্থকদের বিক্ষোভ।
সরকারের অপদার্থতা, ভোটে রিগিং এবং আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরানের খানের পদত্যাগের দাবি জানালেন জামিয়াত উলেমা-এ-ইসলাম ফজল-এর প্রধান মৌলানা ফজলুর রহমান। একই দাবিতে পাকিস্তানের বিরোধী দলনেতাদের নিয়ে গত ২৭ অক্টোবর দক্ষিণ সিন্ধ প্রদেশে ‘আজাদি মার্চ’ নামে একটি বিক্ষোভ র্যালির আয়োজন করেন তিনি।
রাজধানীতে রহমানের কয়েকশো সমর্থক আগেই পৌঁছে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদ পৌঁছনোর কথা ছিল রহমানের। কিন্তু কয়েকশো গাড়ির মিছিল নিয়ে আসার কারণে তাঁর পৌঁছতে দেরি হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন রহমান। সুক্কুর, মুলতান, লৈহৌর এবং গুজরানওয়ালা হয়ে শুক্রবার ইসলামাবাদে পৌঁছেছে তাঁর র্যালি। রাজধানীতে পা রেখেই ইমরান খান ও তাঁর সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন রহমান। সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “ভোটে রিগিং করেই দেশের ক্ষমতায় এসেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। এখনই তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। না হলে আমরাই ওঁকে উত্খাত করব।”
এক সাক্ষাত্কারে রহমান বলেন, “প্রধানমন্ত্রী যদি নিজে পদত্যাগ না করেন, তা হলে দেশে অস্থিরতা তৈরি হবে।” রহমানের অগণিত সমর্থক তো বটেই, পাকিস্তন মুসলিম লিগ-নওয়াজ এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-র নেতা-কর্মীরাও এই আন্দোলনে যোগ দিয়ে ইমরান বিরোধী হাওয়াকে আরও উস্কে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে বিজেপিকে ছাড়াই সরকার গড়তে পারে শিবসেনা, হুঁশিয়ারি সঞ্জয় রাউতের
আরও পড়ুন: অতি প্রবল হয়ে উঠছে সাইক্লোন ‘মহা’, ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা কেরল, লক্ষদ্বীপে
পিপিপি প্রধান বিলাবল ভুট্টো জারদারি বলেন, “ইমরান খান একটা পুতুল। দেশবাসী এই নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁকে যাঁরা নির্বাচিত করেছেন তাঁদের সামনে মাথা ঝোঁকাবে না।”
পরিস্থিতি যে একটা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে চলেছে, তা আঁচ করেই পুলিশ-প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছে। ইসলামাবাদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। হিংসা রুখতে রাজধানীর সর্বত্র সেনা এবং আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সতর্ক প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী ইজাজ শাহ। তিনি বলেন, “আশা করি বিক্ষোভকারীরা সরকারের সঙ্গে হওয়া চুক্তি মেনে শান্তি বজায় রাখবে।” শাসক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর অভিযোগ, পিএমএল-এন এবং পিপিপি এই বিক্ষোভকারীদের উস্কানি দিচ্ছে। কারণ তাদের ধৃত নেতাদের জেল থেকে মুক্ত করতে এই আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের উপর একটা চাপ সৃষ্টি করছে।
ইমরান খান ও তাঁর দল পদত্যাগের এই দাবিকে নস্যাত্ করে পাল্টা বলেছে, সরকারের উন্নতি ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার উন্নতির জন্য যে কোনও ধরনের দাবি মেনে নিতে প্রস্তুত তারা।