লন্ডনে ভারতীয় বংশোদ্ভূত চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের জমায়েত। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-ছাত্রীর ধর্ষণ-খুনের প্রতিবাদে বঙ্গবাসীর পাশে আগেই দাঁড়িয়েছিল লন্ডন থেকে আটলান্টা। এ বার আরজি করে নির্যাতিতার জন্য বিচার চেয়ে ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করে খোলা চিঠি লিখলেন ব্রিটেনবাসী ভারতীয়েরা।
ওই চিঠিতে আরজি কর কাণ্ডের কড়া নিন্দা করে বলা হয়েছে, ধর্ষণ-খুনের বিষয়টিকে সম্পূর্ণ অবহেলা করেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্যেরা ঘটনাস্থলে ভাঙচুর চালিয়েছে, প্রতিবাদকারীদের মারধর করেছে ও আইনি প্রক্রিয়ায় বাধা দিয়েছে।
ব্রিটেনবাসী ভারতীয়দের তরফে ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে, এই ঘটনা মহিলাদের বিরুদ্ধে বাড়তে থাকা হিংসার একটি লক্ষণ। মহিলাদের জন্য নিরাপদ কর্মস্থল তৈরি ও উপযুক্ত বিচারপ্রক্রিয়া তৈরির বদলে মমতা-সহ সরকারের নেতারা আগেও নির্যাতিতাদের অপমান ও লিঙ্গবৈষম্যমূলক মন্তব্য করেছেন। ব্রিটেনবাসী ভারতীয়দের দাবি, আরজি করের ঘটনার দ্রুত বিচারবিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। চলতি তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পর্কে যথাযথ ও স্বচ্ছ মূল্যায়ন করতে হবে। নির্যাতিতার অবমাননা করা হলে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে যৌন নির্যাতন বন্ধের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকার রঙে সাজানো লন্ডনের ভারতীয় হাইকমিশনের সামনেই সমবেত হন ভারতীয় বংশোদ্ভূত চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা। সেই জমায়েত থেকে তাঁরা
বার্তা দিয়েছেন, কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা না থাকলে স্বাধীনতার মূল্য নেই। জমায়েতকারীদের হাতে ছিল ‘বিচার চাই’ ও ‘মহিলাদের বিরুদ্ধে হিংসা বন্ধ করুন’ লেখা পোস্টার। আয়োজকদের অন্যতম নিখিল ম্যাথুর কথায়, ‘‘বিদেশ থেকেও নির্যাতিতার পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া প্রয়োজন।’’
বুধবার রাতে এডিনবরার ‘ন্যাশনাল স্কটিশ মিউজ়িয়াম’-এর সামনে সমবেত হন প্রায় ৭০ জন চিকিৎসক, শিক্ষক, পড়ুয়া ও আইনজীবী। এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ছাত্রী অলক্তা দাসের কথায়, ‘‘এই ভয়ঙ্কর অপরাধ ও সরকারের তরফে তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার আমরা কড়া নিন্দা করছি।’’ নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তনী গৌরব চৌধুরী বর্তমানে এডিনবরায় চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘চিকিৎসক থেকে সাফাইকর্মী, প্রত্যেকের সুরক্ষা নিশ্চিত করা উচিত।’’ উত্তরবঙ্গে ডাক্তারি পড়েছেন মেঘমালা দাস। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে রাস্তায় নেমেছি।’’
২২ অগস্ট পার্লামেন্ট স্কোয়ারে মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর মূর্তির সামনে প্রতিবাদ-সভার ডাক দিয়েছেন ব্রিটেনবাসী ভারতীয়েরা।