আরিয়ানা কমল। — ফাইল চিত্র।
পড়াশোনায় দারুণ ছিলেন। খুব ভাল গানও গাইতেন। আরিয়ানা কমলের বিষয়ে এই কথাই জানালেন তাঁর সহপাঠী এবং স্কুলের শিক্ষকেরা। গত বৃহস্পতিবার আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসে বিলাসবহুল বাংলো থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে উদ্ধার হয়েছিল ১৮ বছরের তরুণীর দেহ।
মিডলবারি কলেজের ছাত্রী ছিলেন আরিয়ানা। কলেজের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, প্রথম বর্ষের সেমিনারে যোগ দিয়েছিলেন আরিয়ানা। তাঁকে পড়িয়েছিলেন মেলিসা হ্যামারলি। সেই মেলিসা বলেন, ‘‘ও গান গাইতে খুব ভালবাসত। কলেজের অপেরা দলের সঙ্গে ইটালি যেতে চেয়েছিল।’’ মিউজিকের শিক্ষক জেফ্রি বুয়েটনার জানান, কলেজের কয়ারের খুব প্রিয় ছিলেন আরিয়ানা। সকলের সঙ্গে গান গাইতে খুব পছন্দ করতেন। কলেজের তরফে জানানো হয়েছে, যাঁরা আরিয়ানাকে চিনতেন, তাঁদের পক্ষে এই খবর মেনে নেওয়া কষ্টকর। গত গ্রীষ্মে স্কুল পাশ করেছিলেন আরিয়ানা। তাঁর স্কুল মিলটন অ্যাকাডেমি বিবৃতি দিয়ে শোকপ্রকাশ করেছে। জানিয়েছে, আরিয়ানা খুব ‘মিষ্টি, স্মার্ট, দয়ালু’ ছিলেন।
ম্যাসাচুয়েটসের রাজধানী বস্টনের থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ডোভার। সেখানেই ১১টি বেডরুম নিয়ে বিশাল এক বাংলোয় থাকতেন রাকেশ কমল। সেই বাংলো থেকেই বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় ৫৭ বছরের রাকেশ, তাঁর স্ত্রী টিনা (৫৪) এবং ১৮ বছরের মেয়ে আরিয়ানার দেহ উদ্ধার হয়েছে। কমল পরিবার আদতে ছিলেন ভারতের বাসিন্দা। আমেরিকায় এসে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। এর পর একটি শিক্ষা সংক্রান্ত সংস্থাও খুলেছিলেন। নাম ‘এডুনোভা’। সেই সংস্থাই মুখ থুবড়ে পড়ে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, চরম আর্থিক সঙ্কটের কারণেই এর পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দম্পতি। যে ১১ শয্যার বাড়ি থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেটি ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৩ কোটি টাকায় কিনেছিলেন ওই দম্পতি। ২০১৯ সালে। গত বছর তা দেনার দায়ে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিট নাগাদ পুলিশ একটি ফোন পায়। তাতে কমল পরিবারের এক আত্মীয় জানান, দীর্ঘ দিন তাঁদের খবর না পেয়ে বাড়িতে এসেছিলেন। কিন্তু কেউ সাড়া দিচ্ছে না। এর পরেই ওই বাংলো থেকে তিন জনের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রাকেশের মেয়ে আরিয়ানা ভারমন্টে একটি বেসরকারি কলেজে পড়াশোনা করতেন। সেই কলেজের ফিও যথেষ্ট বেশি। আরিয়ানার স্কুলের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, তিনি মিষ্টি, স্মার্ট এবং দয়ালু ছিলেন। এই ঘটনায় বিস্মিত ডোভার প্রশাসন। নরফক জেলার অ্যাটর্নির তরফে জানানো হয়েছে, দীর্ঘ দিন এই অভিজাত এলাকায় এ ধরনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা হয়নি।