বিকাশ ভবনে বিক্ষোভ এসএফআই নেতা-কর্মীদের। বিধাননগরে। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের শিক্ষা-ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এবং পাঁচ দফা দাবিকে সামনে রেখে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের বিকাশ ভবন অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার বাধল সোমবার। সংগঠনের অভিযোগ, পুলিশ লাঠি চালিয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে নেতৃত্বকে। পুলিশ অভিযোগ মানেনি।
এসএফআইয়ের ডাকে এ দিন বিধাননগরের করুণাময়ী মোড় থেকে নেতা-কর্মীরা মিছিল করে বিকাশ ভবনের দিকে যাচ্ছিলেন। ব্যারিকেড টপকে বিকাশ ভবনে ঢুকতে গেলে তাঁদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি বাধে। এসএফআই-এর অভিযোগ, পুলিশ লাঠি চালিয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস, রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে, রাজ্য সভাপতি প্রণয় কার্য্যী-সহ অনেককেই। এমনকি, মহিলা নেতা-কর্মীদের মহিলা পুলিশ ছাড়া আটক করার অভিযোগও তোলা হয়েছে। ধৃতদের মুক্তির দাবিতে প্রিজ়ন ভ্যান আটকান এসএফআই কর্মীরা। একই দাবিতে করুণাময়ী মোড়েও অবরোধ করেছিল এসএফআই।
যদিও বিধাননগরের পুলিশের পাল্টা দাবি, মন্ত্রীকে দাবিপত্র দেওয়ার কথা বলা হলেও সময় জানাতে পারেনি এসএফআই। পুলিশের এক কর্তার বক্তব্য, “বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ তা আটকানোর চেষ্টা করে। মহিলাদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা মহিলা পুলিশ-কর্মীরাই করেছেন।” তাঁর আরও দাবি, বিক্ষোভকারীদের অনুরোধে পুলিশ প্রথমে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। কিন্তু অবরোধের পরে ফের দাবিপত্র দেওয়ার নামে গোলমাল করায় গ্রেফতার করা হয়। পরে অবশ্য পুলিশের নজর এড়িয়ে বিকাশ ভবনে ঢুকে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন দেবাঞ্জন, প্রণয়েরা।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “বিকাশ ভবনে বসে থাকা শিক্ষামন্ত্রী নেমে এসে কথা বলতে পারলেন না? পুলিশ তিন বার লাঠি চালিয়েছে। মহিলা পুলিশ ছাড়া ছাত্রীদের গ্রেফতার করেছে। লেখাপড়ার সুযোগ কেড়ে নিয়েছে যারা, সেই সরকারকে জেলে পাঠাতে হবে।” সিপিএমের যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ও বলেছেন, “গত ১৩ বছরের মতো এ বারেও রাজ্য পুলিশ পাঠিয়ে দমনপীড়ন করেছে। আটকদের নিঃশর্ত মুক্তি না-হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।” পুলিশি আচরণের নিন্দায় সরব হয়েছেন গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক কনীনিকা ঘোষ, রাজ্য সভানেত্রী জাহানারা খান। ঘটনাকে ধিক্কার জানিয়ে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর ধৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা-ব্যবস্থাকে শেষ করে দিয়েছে যে সিপিএম, তাদের এসএফআই এখন বড়-বড় কথা বলছে! সিপিএমের সর্বক্ষণের কর্মী মানে, চিরকুটে চাকরি পাবেন, এটাই ছিল দস্তুর!”