(বাঁ দিকে) ভারতীয় রাষ্ট্রদূত প্রণয় বর্মা। মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসে হামলার ঘটনায় বাংলাদেশে ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় বর্মাকে তলব করল মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসন। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি ঢাকায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হাজিরও হয়েছেন। শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত, সে দেশের ভারপ্রাপ্ত বিদেশ সচিব এম রিয়াজ হামিদুল্লাহরের সঙ্গে একান্তে আলোচনা করছেন বর্মা।
বাংলাদেশে সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি এবং সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগে গত কয়েক দিন ধরে দু’দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনাবলির মাঝে সোমবার আগরতলায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসের সামনে হামলার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়াও পুলিশের শীর্ষ স্তরের এক আধিকারিক-সহ চার জনকে সাসপেন্ড করেছে ত্রিপুরার বিজেপি শাসিত সরকার।
সোমবারের এই হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে নয়াদিল্লি। বিবৃতি প্রকাশ করে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, যে পরিস্থিতিই সৃষ্টি হোক না কেন, কোনও দেশের দূতাবাস বা উপদূতাবাসকে নিশানা করা কাম্য নয়। আগরতলায় হামলার ঘটনার পরই মঙ্গলবার তলব করা হল বাংলাদেশে ভারতের রাষ্ট্রদূতকে।
‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদন বলছে, আগরতলার ঘটনার পর সোমবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ হয়। সেখানে ভারত-বিরোধী বেশ কিছু স্লোগানও ওঠে। এই আবহে সোমবার রাতে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়, ভারতীয় দূতাবাস এবং উপদূতাবাসগুলির সামনে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
চট্টগ্রামের এক স্থানীয় বিএনপি নেতার অভিযোগের ভিত্তিতে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গত ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশ পুলিশ গ্রেফতার করে চিন্ময়কৃষ্ণকে। ২৬ নভেম্বর তাঁকে চট্টগ্রাম আদালতে পেশ করা হয়। কিন্তু জামিনের আর্জি মঞ্জুর হয়নি। তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় চট্টগ্রামের আদালত। প্রিজ়ন ভ্যানে তোলার সময় আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখান চিন্ময়কৃষ্ণের অনুগামীরা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। সেই ঘটনার এক সপ্তাহ পরে মঙ্গলবার ফের চিন্ময়কৃষ্ণের জামিন মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তাঁর হয়ে কোনও আইনজীবী মামলা লড়তে রাজি হননি। ফলে মামলার শুনানি এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারি নিয়ে যখন উত্তাল বাংলাদেশ, সেই আবহে আগরতলায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউনূস প্রশাসন।