নরেন্দ্র মোদী (বাঁ দিকে) এবং জাস্টিন ট্রুডো। —ফাইল চিত্র।
খলিস্তানি শিখ নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত বিতর্কে ফের সুর চড়াল ভারত। এই হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় এজেন্টদের ‘সম্ভাব্য যোগ’ রয়েছে বলে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো যে দাবি করেছিলেন, তার প্রেক্ষিতে ‘উপযুক্ত প্রমাণ’ কোথায়, সেই কৈফিয়ত চেয়েছে ভারত। এর পাশাপাশি নয়াদিল্লির তরফে দাবি করা হয়েছে, কানাডা প্রশাসনের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের প্রকাশ্য মন্তব্য এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তকে প্রভাবিত করেছে।
ভারতের তরফে সেই আধিকারিকের নাম নেওয়া না হলেও, তিনি স্বয়ং ট্রুডো কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। কারণ, গত সেপ্টেম্বর মাসে ট্রুডো এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্ভাব্য ভারত-যোগের কথা জানিয়েছিলেন। তাঁর এই দাবি ঘিরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। দুই দেশের সম্পর্ক কার্যত তলানিতে নেমে যায়। প্রায় দু’মাস পরেও সেই পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি হয়নি।
কানাডায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত সঞ্জয়কুমার বর্মা সম্প্রতি ‘গ্লোব অ্যান্ড মেল’ সংবাদপত্রে একটি সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে তিনি কানাডা সরকারকে দুষে বলেন, “এই ঘটনায় (নিজ্জর হত্যাকাণ্ড) আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি যে আমরা তার ভিত্তিতে তদন্তে সহযোগিতা করব। কোথায় তথ্যপ্রমাণ? তদন্তের শেষে কী পাওয়া গেল?” তার পরই তাঁর সংযোজন, “আমরা এখন এটাই বলছি যে, তদন্ত ইতিমধ্যেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে।”
তার পরই আলোড়ন ফেলে দেওয়া একটি দাবি করেছেন কানাডার ভারতীয় রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেছেন, “উচ্চপদে থাকা কোনও ব্যক্তির নির্দেশেই বলা হয়েছে যে, ভারত কিংবা ভারতের এজেন্টরা এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে।”
গত জুন মাসে খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘খলিস্তান টাইগার ফোর্স’ (কেটিএফ)-এর প্রধান তথা কানাডার সারের গুরু নানক শিখ গুরুদ্বার সাহিবের প্রধান নিজ্জরকে গুরুদ্বার চত্বরের মধ্যেই গুলি করে খুন করা হয়। সেই ঘটনার তদন্তে ভারতের গুপ্তচর সংস্থার সম্ভাব্য ভূমিকা ছিল বলে কানাডার পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশনে গত ১৮ সেপ্টেম্বর অভিযোগ করেছিলেন ট্রুডো। কানাডার তদন্তকারী সংস্থাগুলি এ বিষয়ে আরও বিশদে তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি। ট্রুডোর এই দাবিকে ‘অবাস্তব’ এবং ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে উড়িয়ে দেয় ভারত।