Indian-American

চাকরি হারাতে পারেন বাবা, আমেরিকা ছাড়ার আশঙ্কায় কি ঘর ছাড়ল ভারতীয় বংশোদ্ভূত কিশোরী?

১৪ বছরের ওই স্কুলছাত্রীকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল ১৭ জানুয়ারি। ওই দিন স্কুলে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল সে। তবে ৩ সপ্তাহ গড়িয়ে গেলেও বাড়ি ফেরেনি তনভি মরুপল্লি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:২৭
Share:

আমেরিকার কনওয়ে পুলিশ ডিপার্টমেন্ট (সিপিডি) জানিয়েছে, ১৪ বছরের ওই স্কুলছাত্রীকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল ১৭ জানুয়ারি। প্রতীকী ছবি।

মায়ের চাকরি আগেই গিয়েছিল। চাকরি খোয়াতে পারেন বাবাও। তেমনটা হলে আমেরিকায় আর বসবাস করা সম্ভব হবে না তাঁদের পরিবারের। এই আশঙ্কাতেই হয়তো নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক কিশোরী। গত ৩ সপ্তাহের বেশি নিখোঁজ ওই কিশোরীর পরিবারকে এমনই জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

আমেরিকার আরকানসাসের কনওয়ে শহরে বসবাস তনভি মরুপল্লির। কনওয়ে পুলিশ ডিপার্টমেন্ট (সিপিডি) জানিয়েছে, ১৪ বছরের ওই স্কুলছাত্রীকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল ১৭ জানুয়ারি। ওই দিন স্কুলে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল সে। তবে ৩ সপ্তাহ গড়িয়ে গেলেও বাড়ি ফেরেনি তনভি। সিপিডি-র তদন্তকারীদের অনুমান, বাবার চাকরি গেলে তাদের ভারতে ফেরানো হতে পারে, এই আশঙ্কায় বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারে তনভি।

পুলিশের সঙ্গে পুরোপুরি সহমত নয় তনভির পরিবার। উল্টে, আমেরিকার অভিবাসন নীতিকে কাঠগড়ায় তুলেছেন তনভির বাবা পবন রায় মরুপল্লি। তাঁর দাবি, বছরের পর বছর ধরে আমেরিকার বসবাস করলেও তাঁদের নাগরিকত্ব মেলেনি।

Advertisement

আমেরিকার একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী পবনের মাথায় ছাঁটাইয়ের খাঁড়া ঝুলছে বলে মনে করেছিল তনভি। পবনের দাবি, তাঁর চাকরি গেলে ভারতে ফিরে যেতে হতে পারে বলে মেয়ের আশঙ্কা ছিল। সম্প্রতি চাকরি খুইয়ে পরিবার ছেড়ে ভারতে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন তাঁর স্ত্রী শ্রীদেবী ইয়াদারা। এ বার পবনের উপর আর্থিক ভাবে নির্ভরশীল হিসাবে তাঁকে নতুন করে ভিসার আবেদন করতে হবে। তবে কমপক্ষে বছরখানেকের মধ্যে আমেরিকার নিজের পরিবারের কাছে ফিরতে পারবেন না তিনি। পবনের দাবি, কাজ হারালে কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন করেছিল মেয়ে। পবন বলেন, ‘‘মেয়েকে আমি বলেছিলাম, ‘আগে তুমি আর তোমার মা প্রথমে ভারতে ফিরে যেতে যাও। তার পর ভেবে দেখব এ অবস্থায় কী করা যায়। একটা চাকরি পেলে তার পর তোমাদের ডেকে নেব।’ সে সময় ও (মেয়ে) বলেছিল, ‘কী! ভারতে ফিরে যেতে হবে? কেন আমি ভারতে ফিরে যাব? আমি তো এখানেই থাকি।’ ’’

তনভির আশঙ্কা যে অমূলক নয়, তা মনে করছেন তদন্তকারীরা। আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ জানিয়েছে, গত নভেম্বর থেকে গুগ্‌ল, মাইক্রোসফ্‌ট, ফেসবুক এবং অ্যামাজ়মের মতো বহুজাতিক সংস্থা-সহ তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের ২ লক্ষ কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এই ক্ষেত্রের অনেকের দাবি, ওই কর্মীদের ৩০-৪০ শতাংশ কর্মীই ভারতীয়, যাঁদের এইচ-১বি এবং এল-১ ভিসা নিয়ে আমেরিকার চাকরি করতে আসতে হয়। অন্য দিকে, লেঅফট্র্যাকার ডট কম নামে একটি সংস্থার দাবি, চলতি বছরে কেবলমাত্র জানুয়ারিতেই ৯১,০০০ কর্মীকে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

যদিও তনভির বাবা সিপিডি-কে নিয়ে জানিয়েছেন, গোড়ায় চাকরি খোয়ানোর আশঙ্কা থাকলেও আপাতত সেই ভয় নেই। সিপিডি-র মুখপাত্র লেসি ক্যানিপ জানিয়েছেন, তনভির সন্ধানে তল্লাশি ছাড়াও ৫,০০০ ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় যার যা ৪ লক্ষ টাকার বেশি) পুরস্কার ঘোষণা করেছে তার পরিবার। তিনি বলেন, ‘‘বাড়িছাড়া হওয়াটা যে কোনও শিশুর ক্ষেত্রেই বড় ব্যাপার। তবে মেয়েটিকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement