ছবি: সংগৃহীত।
কাশ্মীর নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে মালয়েশিয়ার প্রবল ভারত বিরোধিতায় ক্ষুব্ধ নয়াদিল্লি এ বার জবাব দিতে চাইছে। মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক কমিয়ে আনার, এমনকি প্রয়োজনে ছিন্ন করার কথাও ভাবা হচ্ছে। বিতর্কিত মুসলিম ধর্মগুরু জাকির নায়েককে ভারতে ফেরানোর জন্য মালয়েশিয়া কিছুই করছে না বলে গত কয়েক মাস ধরে ঘরোয়া ভাবে জানাচ্ছিল সাউথ ব্লক। কাশ্মীর নিয়ে মালয়েশিয়ার অবস্থানে সেই ক্ষোভ আরও বেড়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
মালয়েশিয়া পাম তেল উৎপাদনে বিশ্বের প্রথম সারিতে। এই বছরের প্রথম ছ’মাসে ৯০ কোটি মিলিয়ন ডলারের পাম তেল সে দেশ থেকে আমদানি করেছে ভারত। এ বার সেই পরিমাণ কমানো হবে কিনা, ভাবা হচ্ছে। সরকারি সূত্রের মতে, এই তেল মালয়েশিয়ার বদলে ইন্দোনেশিয়া থেকে খুব সহজেই আমদানি করতে পারে ভারত। কিন্তু সে ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার সাধারণ কৃষকদের সঙ্কটের কথাটিও মাথায় রাখা হচ্ছে।
২০১৮-১৯-এ ভারত-মালয়েশিয়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারতের ঘাটতি ছিল ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার। অর্থাৎ ভারতের সে দেশে রফতানির তুলনায় সে দেশ থেকে আমদানি বেশি। এ বার তার পরিবর্তন নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। নয়াদিল্লির আরও ক্ষোভের কারণ, দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নত করার জন্য বাড়তি সক্রিয় ছিল ভারত। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ২০১০ সালে মালয়েশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত চুক্তি করেছিলেন। যা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে নরেন্দ্র মোদী আরও বৃহত্তর জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন। ২০১৮ সালে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি করে আনা হন মালয়েশিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজেককে। মাহাথির মহম্মদ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওযার পরে মোদী বিদেশ সফরের পথ বদলে নিজেই চলে গিয়েছিলেন তাঁকে অভিনন্দন জানাতে। দেড়শোরও বেশি ভারতীয় সংস্থা এই মুহূর্তে সে দেশে কাজ করছে। ভারতীয় বায়ুসেনার পক্ষ থেকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় মালয়েশিয়ার যুদ্ধবিমানের পাইলটদের। কাশ্মীর-মন্তব্যের পরে ভারত এই সম্পর্ক কোথায় নিয়ে যায়, সেটাই এখন দেখার।