এই নিয়ে টানা চতুর্থ বছরে সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের ‘কালো টাকার’ হদিস পেল ভারত। প্রতীকী ছবি।
অনাবাসী ভারতীয় ও দেশীয় সংস্থার প্রায় ৩৪ লক্ষ সুইস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সবিস্তার তথ্য ভারত সরকারের হাতে তুলে দিল সুইৎজ়ারল্যান্ড। ওই অ্যাকাউন্টগুলি যে সমস্ত ভারতীয় নাগরিক ও সংস্থার নামে খোলা হয়েছে, তাঁরা ১০১টি দেশে ছড়িয়ে রয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। এই নিয়ে টানা চতুর্থ বছরে সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের ‘কালো টাকার’ হদিস পেল ভারত।
সোমবার একটি বিবৃতিতে সুইৎজ়ারল্যান্ডের ফেডারাল ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফটিএ)-এর আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে সুইৎজ়ারল্যান্ডের স্বয়ংক্রিয় তথ্য বিনিময় চুক্তি (অটোমেটিক এক্সচেঞ্জ অব ইনফরমেশন বা এইওআই)-র অঙ্গ হিসাবে গত সেপ্টেম্বরের এই তথ্যাদি জানানো হয়েছে। আগামী বছরের সেপ্টেম্বরেও এ ধরনের তথ্য বিনিময় হবে। গত বছর ভারত-সহ ৮৬ দেশের সঙ্গে এমন তথ্য বিনিময় করেছে সুইৎজ়ারল্যান্ড। চলতি বছরে অবশ্য সে তালিকায় আলবেনিয়া, ব্রুনেই দারুসালেম, নাইজিরিয়া, পেরু এবং তুরস্ক— বেশ কয়েকটি দেশ জুড়েছে। সেই সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সংখ্যাও প্রায় ১ লক্ষ বেড়েছে।
সুইস ব্যাঙ্কের এই তথ্যসমূহের সাহায্যে হিসাববহির্ভূত সম্পদের হদিস পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া, কর ফাঁকি দেওয়া বহু ব্যক্তি বা সংস্থাগুলিকে অথবা কালো টাকার মাধ্যমে জঙ্গি কার্যকলাপে মদতদাতাদেরও ধরা সম্ভব হতে পারে। এই তথ্যসমূহকে হাতিয়ার করে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করাও যেতে পারে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, নাম গোপন রাখার শর্তে এক সুইস আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই অ্যাকাউন্টগুলি বেশির ভাগই বহু ভারতীয় ব্যবসায়ী, অনাবাসীদের নামে রয়েছে। তাঁদের অনেকেই আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ একাধিক দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশে ছড়িয়ে রয়েছেন। অনেকে আবার লাতিন আমেরিকা এবং আফ্রিকায় বসবাস করছেন।
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি যে সমস্ত ব্যক্তি বা সংস্থার, তাঁদের নাম-ঠিকানা ছাড়াও ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার এবং মূলধনী আয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণও ভারতের হাতে তুলে দিয়েছেন সুইস কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া, ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির মালিক এই মুহূর্তে কোন দেশে বসবাস করছেন অথবা তাঁর সুইস অ্যাকাউন্টে কত অর্থ রয়েছে, তা-ও জানিয়েছে এফটিএ।
এই বিপুল সংখ্যক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য ছাড়াও ইতিমধ্যেই একশোরও বেশি এমন ভারতীয়ের সম্পর্কে সুইস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যাঁরা কেউ কর ফাঁকি দেওয়া বা আর্থিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত।
এফটিএ জানিয়েছে, ব্যাঙ্ক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান-সহ প্রায় ৯ হাজার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ ধরনের বিনিময় করা হয়েছে। যেগুলি তারা সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছে। এর বিনিময়ে প্রায় ২৯ লক্ষ অ্যাকাউন্টের তথ্য হাতে পেয়েছে সুইৎজ়ারল্যান্ড।