দেশবাসীকে নিরাপদস্থলে আশ্রয় নিতে অনুরোধ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। ছবি: রয়টার্স।
২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেন জুড়ে আবার রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের ধারাবাহিক হামলা। সোমবার সকালে আকাশপথে আক্রমণের জেরে একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কিভ-সহ ইউক্রেনের একাধিক শহর। শুধুমাত্র কিভের কেন্দ্রস্থলেই অন্তত ৫টি বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ শোনা গিয়েছে বলে দাবি। ইউক্রেন জুড়ে ৭৫টি ধারাবাহিক হামলা হয়েছে বলে দাবি। এতে কমপক্ষে ৫ জনের প্রাণহানি-সহ অনেকে আহত হয়েছেন বলে সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর।
সোমবার সকাল সওয়া ৮টা (ভারতীয় সময় অনুযায়ী, সোমবার সকাল পৌনে ১১টা) থেকে আকাশপথে রাজধানীর কিভের নানা প্রান্তে ধারাবাহিক হামলা চালায় ভ্লাদিমির পুতিনের সেনাবাহিনী। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দফতরের উপপ্রধান কিরিলো টাইমোশেঙ্কো সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘ক্ষেপণাস্ত্রহানার মুখে ইউক্রেন। আমাদের দেশের বহু শহরে এই হামলা চলছে বলে খবর আসছে।’’ ইউক্রেনবাসীদের নিরাপদে স্থানে আশ্রয় নিতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। কিভের মেয়র ভিতালি ক্লিটসচ্কোর দাবি, ‘‘রাজধানীর কেন্দ্রে শেভচেনকিভস্কি জেলায় বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ হয়েছে।’’ এই হামলাকে ‘রুশ জঙ্গিদের আক্রমণ’ বলে তকমা দিয়েছেন তিনি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি জানিয়েছেন, রুশ হামলার জেরে দেশের বহু নাগরিকের প্রাণহানি হয়েছে। সেই সঙ্গে দেশ জুড়ে আহত হয়েছে বহু বাসিন্দা। বস্তুত, ২৬ জুনের পর কিভের মাটিতে এই প্রথম রুশ হামলা হয়েছে। সমাজমাধ্যমে জ়েলেনস্কি লিখেছেন, ‘‘ইউক্রেন জুড়ে আকাশপথে হামলার জেরে সাইরেন থামছে না... সেই হামলায় হতাহত বহু। (নাগরিকদের) অনুরোধ, দয়া করেন আপনারা আশ্রয়স্থল ছেড়ে বেরোবেন না।’’ জ়েলেনস্কির দাবি, ইউক্রেনকে নিশ্চিহ্ন করে দিতেই এই ‘অশুভ হামলা’ রাশিয়ার।
প্রসঙ্গত, রবিবারও ইউক্রেন হামলা চালিয়েছিল রুশ সেনাবাহিনী। তাতে শিশু-সহ তেরো জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেন জ়েলেনস্কি। প্রেসিডেন্টের দফতরের দাবি, ওই হামলায় আহত হয়েছেন এগারো শিশু-সহ উনআশি জন।
শুধুমাত্র কিভের কেন্দ্রস্থলেই অন্তত ৫টি বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ শোনা গিয়েছে বলে দাবি। ছবি: রয়টার্স।
ঘটনাচক্রে, রাশিয়ার সঙ্গে ক্রাইমিয়ার সংযোগরক্ষাকারী একটি সেতু বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেওয়ার পরের দিনই এই ধারাবাহিক বিস্ফোরণ। ওই ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়। ওই হামলার পিছনে ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাত দেখছেন পুতিন। তাঁর দাবি, ‘‘ইউক্রেনীয় গুপ্তচর সংস্থাই ওই হামলার পরিকল্পক, কার্যকর এবং পৃষ্ঠপোষক।’’ একে ‘জঙ্গিহানা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন পুতিন।
প্রসঙ্গত, ক্রাইমিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার সংযোগরক্ষা করা ছাড়া ওই সেতু দিয়ে রুশ সেনাদের সামরিক রসদ পাঠানো হত। ফলে ইউক্রেনের যুদ্ধে তার ভিন্ন মাত্রা রয়েছে।