—ফাইল চিত্র
লাদাখে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ সত্ত্বেও, ‘শান্তি ও স্থিতাবস্থা’ বজায় রেখে দু’পক্ষের সম্পর্কের ক্ষয়ক্ষতি মেরামত করে নেওয়া এখনও সম্ভব। এমনটাই মনে করছে চিন। বুধবার ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-এর আলোচনার কিছু ক্ষণ পর, এই মর্মেই বার্তা দেওয়া হয়েছে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রচার বিভাগের পত্রিকা ‘চায়না ডেলি’-তে। ওই সংবাদপত্রের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর উত্তেজনার পারদ নামিয়ে আনার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। শান্তির বার্তা দিলেও, গলওয়ানের সংঘর্ষের জন্য ভারতকে দোষারোপ করেছে বেজিং।
‘চায়না ডেলি’-র ওই সম্পাদকীয়তে দাবি করা হয়েছে, লাদাখের ওই সংঘর্ষে কোনও পক্ষই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেনি। তাই বেজিং মনে করে, শান্তি ও স্থিতাবস্থার আবহ বজায় রেখে ড্যামেজ কন্ট্রোল করে নেওয়া এখনও সম্ভব। হিংসা ও প্রত্যাঘাত এড়াতে সীমান্ত বিতর্কের মীমাংসা প্রক্রিয়া চালু করা এবং বিভিন্ন স্তরে পুরোদমে আলোচনা শুরুর ব্যাপারেই গুরুত্ব দিচ্ছে চিন। এ কথা ভারতীয় বিদেশমন্ত্রীকে চিনা বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন বলেও দাবি করা হয়েছে ওই সম্পাদকীয়তে। তবে সে জন্য সহায়ক পরিস্থিতি তৈরির কথাও বলছে বেজিং। সংঘর্ষের পর প্রাথমিক ভাবে দু’পক্ষকে সংযত হওয়ার বার্তাই দেওয়া হয়েছে। এমনটাই লেখা হয়েছে ওই সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে।
শান্তি ও সমঝোতার বার্তা দিলেও, গলওয়ানে সংঘর্ষের জন্য ভারতীয় সেনাকে দোষারোপ করেছে চিন। ‘চায়না ডেলি’-তে লেখা হয়েছে, ‘‘চিনা সেনার উপর হামলা চালাতে ভারতীয় সেনা দু’বার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করেছে।’’ ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে কথোপকথনের সময় চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই ওই প্রসঙ্গ তোলেন বলেও সম্পাদকীয়তে দাবি করা হয়েছে। এ-ও লেখা হয়েছে, যাতে সংঘর্ষে জয়ী ও পরাজিতের ধারণা না তৈরি হয় সে কারণেই চিনের তরফে হতাহতের কোনও সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। তবে সোমবারের সংঘর্ষ গত চার দশকে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে ‘সবচেয়ে ভয়াবহ’ বলেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে ‘চায়না ডেলি’-তে।
আরও পড়ুন: ছক কষে হামলা, চিনা বিদেশমন্ত্রীকে অভিযোগ জয়শঙ্করের
এ দিন সকালেই বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-এর এক প্রস্থ কথোপকথন হয়। তার পর ‘চায়না ডেলি’-র এই সম্পাদকীয় যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ কূটনৈতিক মহল মনে করে, বাস্তবে ‘চায়না ডেলি’ আসলে চিন সরকারেরই কণ্ঠস্বর।
আরও পড়ুন: ভারত শান্তি চায়, কিন্তু প্ররোচনা এলে জবাব দিতেও তৈরি: প্রধানমন্ত্রী