মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক মোরামত করতে উদ্যোগী নয়াদিল্লি। ফাইল চিত্র।
তালিবান তথা হক্কানি নেটওয়ার্ক-এর সম্ভাব্য আক্রমণের কথা মাথায় রেখে মস্কোর সঙ্গে সম্পর্কের ধুলো ঝাড়তে সক্রিয় নয়াদিল্লি।
দু’দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সম্প্রতি বৈঠক করে গোয়েন্দা তথ্য এবং অন্যান্য নিরাপত্তা ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পাশাপাশি আফগানিস্তানের সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে ঠেকানোর জন্য পথনির্দেশিকাও তৈরি হচ্ছে বলে খবর।
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, ভারতের ঐতিহ্যগত মিত্র রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সমন্বয় এবং সহযোগিতার বিপুল ক্ষেত্র মোটের উপর একই ছিল ঠিকই। কিন্তু রাজনৈতিক উষ্ণতা ক্রমশ কমে এসেছিল গত দশ বছরে। তার প্রধান কারণ, ভারত কৌশলগত ক্ষেত্রে অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে উঠেছিল আমেরিকার উপরে। দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার নিরাপত্তার প্রশ্নে ওয়াশিংটনের ছায়া হয়েই কাজ করেছে নয়াদিল্লি, এমনটা মনে করে কূটনীতিকদের বড় অংশ। বিশেষ করে আফগানিস্তানের পরিকাঠামো এবং অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পে ভারতের উপস্থিতি থেকেছে আমেরিকার নির্দেশিত পথেই। ভারত ‘কোয়াড’-এ সক্রিয় অংশ নিয়েছে, রাশিয়ার আপত্তি সত্ত্বেও। সামরিক সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রেও অনেক ক্ষেত্রে আমেরিকাকে বেশি গুরুত্বও দিয়েছে।
আমেরিকার সেনা আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার পর পরিস্থিতি বদলেছে। ভারতের নিরাপত্তা নীতিতে আফগানিস্তানের সরাসরি প্রতিবেশীরা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাদের অন্যতম শক্তিশালী রাশিয়া, তালিবানদের সঙ্গে নিজেদের মতো করে বোঝাপড়া করেছে ঠিকই, কিন্তু তা কতটা টেকসই তা তারা নিজেরাও বুঝতে পারছে না। আর এই সঙ্কটকালে রাশিয়ার হাত আবারও শক্ত করে ধরতে উদ্যোগী মোদী সরকার।
সূত্রের খবর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং রাশিয়ার নিরাপত্তা সচিব নিকোলাই পাত্রুশেভ একমত হয়েছেন, আফগানিস্তানে এই মুহূর্তে ভিন্দেশি জঙ্গি সংগঠনের উপস্থিতি বাড়ছে। তারা ভারত এবং মধ্য এশিয়ার কিছু দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে বিপজ্জনক। মাদক এবং অস্ত্রশস্ত্র আফগানিস্তান সীমান্ত পার হয়ে আসার সম্ভাবনাও দেখছেন দু’দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কর্তারা। সেই সঙ্গে ইসলামি মৌলবাদের প্রসার নিয়েও তাঁরা উদ্বিগ্ন। জানা গিয়েছে, দু’দেশ সামরিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও গভীর করার পাশাপাশি আফগানিস্তানভিত্তিক গোয়েন্দা তথ্য তৎক্ষণাৎ বিনিময় করার জন্য ব্যবস্থার কথা ভাবছে। সে ক্ষেত্রে ভারত এবং রাশিয়ার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থাগুলির মধ্যে গোয়েন্দা-তথ্যের বিনিময় আরও মসৃণ হবে বলে জানা গিয়েছে।