কলম্বোয় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার গোপাল বাগলে। ফাইল ছবি
‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ, সব কা বিশ্বাস’-এর পাশাপাশি ‘সব কা প্রয়াস’ও জুড়ে দিচ্ছেন কলম্বোয় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার গোপাল বাগলে। বুধবার শ্রীলঙ্কার সঙ্কট সমাধানের ব্যাখ্যা দিচ্ছেন এ ভাবেই। বাগলের কথায়, “শ্রীলঙ্কা এবং ভারত সম্পর্ক আত্মিক। তারা যমজ সন্তানের মতো। ভারতের প্রতিবেশী নীতির কেন্দ্রে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। আমরা বরাবরই এখানকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।”
আজ শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন রনিল বিক্রমসিংঘে। সেই আবহেই বাগলের বার্তা, যে সরকারই আসুক না কেন, ভারত একই ভাবে কলম্বোর পাশে থাকছে। সে দেশের মানুষের অসহায় অবস্থা দূর করার জন্য দিল্লির যতটুকু করার করা হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, শ্রীলঙ্কায় সাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকেই সমর্থন করবে ভারত।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের পাশাপাশি, শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক টালমাটাল নিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই প্রথম বিশদে মুখ খোলা হল। বাগলে বলেন, “শ্রীলঙ্কায় অত্যন্ত দুঃসময় চলছে। অর্থনৈতিক সঙ্কট ছাড়াও গোটা বিষয়টির রাজনৈতিক মাত্রা রয়েছে। ভারতের হাইকমিশনার হিসাবে আমি এবং আমার সতীর্থরা দিল্লির নির্দেশ অনুযায়ী শ্রীলঙ্কার মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে চলেছি, যাতে তাঁরা ঘুরে দাঁড়াতে পারেন। অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পুনরুদ্ধার, সুস্থিতি এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে জোরালো ভাবে সমর্থন করছি।” তিনি জানিয়েছেন, সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার স্পিকার মহেন্দ্র আপা আবেবর্ধনের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে দেখা করে এই বার্তা ভারতের পক্ষ থেকে দিয়ে এসেছেন তিনি।
মঙ্গলবারই সর্বদলীয় সাংসদদের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেখানে ভারতের সহায়তার খতিয়ান তুলে ধরেছিলেন তিনি। আজ বাগলে জানান, ভারত দু’রকম ভাবে সহায়তা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রথমটি হল অত্যাবশ্যক পণ্যের সরবরাহ এবং দুই, সে দেশের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারকে মজবুত করা। এখনও পর্যন্ত দেড়শো কোটি ডলারের অত্যাবশ্যক পণ্য পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে শুধু জ্বালানির জন্যই দেওয়া হয়েছে ৫০ কোটি ডলার মূল্যের। দেওয়া হয়েছে কৃষি সারও। ভারতীয় হাইকমিশনার জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আইএমএফ-এর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। তাদের স্বল্পমেয়াদি সাহায্য দেওয়ার পাশাপাশি, দীর্ঘমেয়াদি লাভের জন্য দক্ষতা নির্মাণের (ক্যাপাসিটি বিল্ডিং) কথাও ভাবছে ভারত।
শ্রীলঙ্কার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাব কি তামিল সমস্যাকে বাড়িয়ে দিতে পারে? বাগলের জবাব, ‘‘শ্রীলঙ্কার সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন হোক, এটাই চায় নয়াদিল্লি। ধারবাহিক ভাবে সে কথা বলে আসা হচ্ছে।তবে বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে তামিল সমস্যার সরাসরি কোনও যোগ নেই।” প্রসঙ্গত, ত্রয়োদশ সংশোধনীতে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কার অন্যতম সরকারি ভাষা হবে তামিল, গোটা দেশে প্রাদেশিক কাউন্সিল তৈরি হবে।