ইমরান খানকে লক্ষ্য করে গুলি। ফাইল চিত্র
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গুলিবিদ্ধ! পাক সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে পাক পঞ্জাব প্রদেশের গুজরনওয়ালার আলওয়ালা চকে একটি এসইউভিতে সওয়ার ইমরান তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশে লং মার্চে যোগদানের আবেদন জানাচ্ছিলেন। সে সময় এক ব্যক্তি এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে।
হামলাকারীকে গ্রেফতার করা হয় ঘটনাস্থলেই। যদিও ইমরানের সঙ্গীদের গুলিতে গুরুতর আহত ওই ব্যক্তির কিছু ক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় বলে সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে। ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতা ফাওয়াদ চৌধরি জানিয়েছেন, আহত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য লাহোরে আনা হচ্ছে। হামলার ঘটনার পিছনে কোনও জঙ্গি সংগঠন জড়িত বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পাক পুলিশ।
পাকিস্তানে গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠার দাবিতে গত শুক্রবার লাহোর থেকে ইসলামাবাদ লং মার্চ শুরু করেছন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। দলের সব নেতা, কর্মী ও সমর্থককে লাহোরের লির্বাটি চকে সমবেত হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন ইমরান। সেখান থেকে তাঁরা সকলে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার হেঁটে ইসলামাবাদে যাচ্ছেন। সেই কর্মসূচির অংশ হিসাবেই ওয়াজিরাবাদের অদূরে গুজরনওয়ালায় দলীয় সমর্থকদের সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন ইমরান। সেখানেই গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে।
ইমরানের পায়ে একাধিক গুলি লেগেছে বলে তাঁর দলের নেতাদের দাবি। আপ্ত সহায়ক-সহ আরও কয়েক জন নেতা-কর্মী গুলি বিদ্ধ হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ইমরানের ওই পদযাত্রাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল। কিন্তু গত মাসে পাকিস্তানের শীর্ষ আদালত সেই দাবি খারিজ করে দেয়। পিটিআই নেতৃত্বের একাংশের মতে, ইমরানের উপর হামলার নেপথ্যে কোনও ‘রাজনৈতিক কারণ’ থাকতে পারে।
ঘটনাচক্রে, সাম্প্রতিক কালে পাক সেনা ও সামরিক গুপ্তচর সংগঠন আইএসআইয়ের বিরুদ্ধে একাধিক বার তাঁর বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে’ জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন ইমরান। নজিরবিহীন ভাবে যার জবাব দিতে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আহমেদ অঞ্জুম। এই পরিস্থিতিতে ইমরানের উপর হামলার নেপথ্যে ‘অন্য কারণ’ থাকতে পারে বলেও তাঁর অনুগামীদের একাংশের ধারণা।
এর আগেও পাকিস্তানে একাধিক নেতা-নেত্রী জনসভায় হামলার শিকার হয়েছেন। সে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান জনসভায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছিলেন। ২০০৭-এর ২৭ জানুয়ারি ১৫ বছর বয়সী এক আত্নঘাতী বোমারুর হামলায় নিহত হন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো। আত্নঘাতী হামলা চালানো কিশোরের নাম বিলাল। রাওয়ালপিন্ডিতে এক নির্বাচনী জনসভা শেষ করে বেনজির যখন তাঁর গাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেই সময় বিলাল তাঁকে গুলি করে এবং পরে আত্নঘাতী হামলা চালায়। পাক তালিবান (টিটিপি) ওই হামলার নির্দেশ দিয়েছিল বলে জানা যায়।