দেশের সম্ভাব্য নাম পরিবর্তন নিয়ে তুরস্কের উদাহরণ টানল রাষ্ট্রপুঞ্জ। ছবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তুরস্কের জাতীয় পতাকা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দেশের নাম বদল নিয়ে চর্চার আবহেই এ বার এই বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল রাষ্ট্রপুঞ্জ। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসের সহকারী মুখপাত্র ফারহান হককে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট দেশের তরফে নাম বদলের বিষয়টি নিয়ে অনুরোধ করা হলে তারা সেগুলি খতিয়ে দেখে অনুমোদন দিয়ে থাকেন। এই প্রসঙ্গে তুরস্কের উদাহরণও টেনেছেন তিনি। গত বছরই তুরস্কের নাম বদলে তুর্কিয়ে করা হয়।
দেশের নাম বদলে ‘ভারত’ করা হতে পারে— সরকারি তরফে স্পষ্ট করে কিছু জানানো না হলেও এই নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের অন্যতম শীর্ষ পদাধিকারীকে প্রশ্ন করা হয়। মহসচিবের সহকারী মুখপাত্র ফারহান তখন তুরস্কের উদাহরণ দিয়ে বলেন, “তুর্কিয়ার কথাই যদি ধরেন, প্রথামাফিক সরকারের তরফে আমাদের কাছে অনুরোধ জানানো হয়। অবশ্যই আমরা সেই অনুরোধ খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নিই।” অবশ্য, অনেকেই মনে করছেন, এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের সিদ্ধান্ত কার্যত মানতে বাধ্য রাষ্ট্রপুঞ্জ।
মঙ্গলবার সকালে জি২০ শীর্ষবৈঠকে অংশ নেওয়া বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের কাছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্র প্রকাশ্যে আসার পরেই জল্পনা শুরু হয়, লোকসভা ভোটের আগে দেশের নাম শুধুই ‘ভারত’ করতে চলেছে মোদী সরকার। রাষ্ট্রপতির ওই আমন্ত্রণপত্রে লেখা হয়েছে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’। কিন্তু ভারতের রাষ্ট্রপতি কাউকে কোনও চিঠি লিখলে তাতে চিরাচরিত ভাবে লেখা থাকে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’ কথাটি। এ সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনী বিল পাশের জন্যই আগামী ১৮-২২ ডিসেম্বর সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে বলেও জল্পনা দানা বাঁধে। যদিও সরকারি ভাবে এ বিষয়ে এখনও কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার রাতেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর আসন্ন ইন্দোনেশিয়া সফরের সূচি এক্স (সাবেক টুইটার)-এর হ্যান্ডলে প্রকাশ করেন বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র। সেখানে মোদীর পদ লেখা হয়েছে, ‘প্রাইম মিনিস্টার অফ ভারত’। যদিও সরকারি প্রথা অনুযায়ী তাঁর পদটিকে ‘প্রাইম মিনিস্টার অফ ইন্ডিয়া’ লেখা হয়। ৭ সেপ্টেম্বর মোদী ইন্দোনেশিয়ায় ২০তম ‘আসিয়ান-ইন্ডিয়া শীর্ষ সম্মেলনে’ যোগ দিয়েছেন। সরকারি নথিতে অবশ্য ওই সম্মেলনের নামের ক্ষেত্রে ‘ইন্ডিয়া’ শব্দটি রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কূটনৈতিক বিভ্রাট এড়াতেই এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও সরকারি ভাবে এখনও এ বিষয়ে কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।