ইমরান খান (বাঁ দিকে) এবং পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির। ছবি: রয়টার্স।
জেল থেকেই পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ‘ছেড়ে না দেওয়ার’ হুঁশিয়ারি দিলেন সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ক্রিকেটার-রাজনীতিক ইমরান তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিকে আটক করার জন্য সরাসরি মুনিরকেই দায়ী করেছেন।
একাধিক মামলায় অভিযুক্ত ইমরান বর্তমানে পাকিস্তানের আদিয়ালা জেলে বন্দি। সেখানেই বেশ কয়েকটি পাক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় দেশের সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রধান। পরে ইমরানের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডল থেকে একটি দীর্ঘ পোস্ট করে এই কথোপকথনের সারাংশ তুলে ধরা হয়। ওই এক্স-পোস্ট অনুসারে, ইমরান সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের বলেন, “সেনাপ্রধান আসিম মুনির আমার স্ত্রীকে আটক করায় সরাসরি যুক্ত।” তার পরেই সেনাপ্রধানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তাঁর মন্তব্য, “যদি আমার স্ত্রীর কিছু হয়, আমি আসিম মুনিরকে ছেড়ে দেব না। যত দিন বেঁচে থাকব আসিম মুনিরকে ছাড়ব না। উনি যা যা অসাংবিধানিক এবং অবৈধ পদক্ষেপ করেছেন, সব ফাঁস করে দেব।”
প্রসঙ্গত, একটি দুর্নীতি মামলায় এবং অবৈধ বিয়ে সংক্রান্ত একটি মামলায় অভিযুক্ত ইমরান-পত্নী বুশরা। বর্তমানে তিনি ইসলামাবাদ সংলগ্ন শহরতলি বানি গালা এলাকার বাড়িতে বন্দি। ইমরান স্ত্রীর আটক হওয়ার প্রসঙ্গে তো বটেই, পাঁচ দিনে তাঁকে তিনটি মামলায় অভিযুক্ত করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। পাক সেনাপ্রধানকে ‘জঙ্গলের রাজা’ বলে কটাক্ষ করে বলেছেন, “যদি উনি (মুনির) মনে করেন, তবে নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে হওয়া যাবতীয় মামলার কথা উনি ভুলে যেতেই পারেন এবং আমায় পাঁচ দিনে তিনটি মামলায় অভিযুক্ত করতে পারেন।”
ইমরানের সঙ্গে পাক সেনার সম্পর্ক বরাবরই ‘মধুর’। একদা সেনার সমর্থনেই তিনি ইসলামাবাদের মসনদে বসেছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। কিন্তু ক্রমে সেই সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি হয়। সেনার মদতেই তাঁকে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়েছে বলে দাবি করেন ইমরান। সম্প্রতি পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে সর্বাধিক আসন পেয়েছিলেন ইমরানের দল সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা। কিন্তু শাহবাজের দল বিলাবল ভুট্টো জারদারির দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠন করে। ইমরান শিবিরের বক্তব্য, তাদের ক্ষমতা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতেই ওই দুই দলকে মিলিয়ে দিয়েছে সেনা। সেনা-ইমরান এই সংঘাত ‘কাপ্তানে’র সাম্প্রতিক মন্তব্যের পর আরও তীব্র হল বলে মনে করা হচ্ছে।