দক্ষিণ ইটালির উপকূলে ক্রোটন বন্দরে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য মাছ ধরার একটি নৌকার মধ্যে অপেক্ষা করছেন পরিযায়ীরা। শনিবার। ছবি: পিটিআই।
ক্যালাব্রিয়ার সাগরে ঢেউয়ের সঙ্গে লড়তে থাকা তিনটি নৌকাকে উদ্ধার করল ইটালির উপকূলরক্ষী বাহিনী। তার ফলে শনিবার প্রায় হাজারেরও বেশি পরিযায়ী মানুষ দক্ষিণ ইটালির উপকূলে এসে পৌঁছলেন।
রক্ষী বাহিনীর একটি ভেসেল ৫৮৪ জনকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে রেগ্গিও ক্যালাব্রিয়া শহরে। অন্য একটি ভেসেল সাগরে যাত্রীবোঝাই একটি জেলে নৌকা থেকে ৪৮৭ জনকে উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে ক্রোটন বন্দরে। সিসিলি উপকূলে উদ্ধার করা হয়েছে আরও ২০০ জনকে। এই নিয়ে বুধবার থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৪০০০ মানুষ ইটালিতে এলেন। গত বছর মার্চে এই সংখ্যাটা ছিল ১৩০০।
গত মাসের ২৬ তারিখ ক্যালাব্রিয়ার সাগরেই পরিযায়ী বোঝাই একটি জাহাজ ভেঙে ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত তার মধ্যে শেষ মৃতদেহ, এক কিশোরীর দেহ আজই উদ্ধার হয়েছে। ৩০ জন এখনও নিখোঁজ। উদ্ধার করা গিয়েছে ৭৯ জনকে। ইটালি সরকারের দিক থেকে কোনও গাফিলতি ছিল কি না, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। যদিও জর্জিয়া মেলোনির রক্ষণশীল সরকারের দাবি, এ বিষয়ে তাদের কোনও দায় নেই। মানব পাচারকারীদের চক্রই এর পিছনে সক্রিয়। তবে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে আর না ঘটে, সে জন্য উপকূলে নজরদারি বাড়িয়েছে রক্ষী বাহিনী। সেই সূত্রেই শুক্রবার তাদের আটটি নৌকা উদ্ধার অভিযানে নামে। নৌবাহিনীর একটি নৌকাও সঙ্গে ছিল।
পরিযায়ীর স্রোত নিয়ন্ত্রণ করা আপাতত ইটালি সরকারের কাছে বড় মাথাব্যথা। মেলোনি সরকার বেসরকারি উদ্ধার-নৌকার উপরে আগল বসাতে চাইছে। গত বছরের শেষ থেকেই সরকার এই মর্মে একাধিক পদক্ষেপ করেছে। গত বৃহস্পতিবারও মেলোনি মন্ত্রিসভা মানব পাচারকারীদের জন্য কঠোরতর শাস্তির বিধান দিয়েছে, সেই সঙ্গে আইনি অভিবাসনের রাস্তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে উত্তর আফ্রিকার উপকূলে বেসরকারি উদ্ধার-নৌকার সংখ্যা কমেছে বেশ কিছুটা। কিন্তু পরিযায়ীদের স্রোতে ভাটা পড়েনি। এ বছর এখনও পর্যন্ত ১৭ হাজার মানুষ ইটালিতে এসেছেন, গত বছর এই পর্বে যে সংখ্যাটা ছিল ৬ হাজার।