চমক: দরজা খুলেই হিউ গ্রান্ট। রবিবার লন্ডনে। সোশ্যাল মিডিয়া
দরজায় দরজায় কড়া নাড়ছেন প্রধানমন্ত্রী। কেউ দরজা খুললেই হেসে বলছেন ‘শুভ বড়দিন’।
২০০৩-এর ব্লকবাস্টার ছবি ‘লাভ, অ্যাকচুয়ালি’র সেই দৃশ্য ফিরে এসেছে বাস্তবের দুনিয়ায়। সেই ছবিতে ব্রিটিশ অভিনেতা হিউ গ্রান্ট এক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। আর গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রচার চালাতে উত্তর লন্ডনের ফিঞ্চলে ও গোল্ডার্স গ্রিন এলাকায় পৌঁছে গিয়েছিলেন গ্রান্ট। বাড়ি
বাড়ি গিয়ে তিনি বলেছেন— ‘‘ব্রেক্সিট রুখে দিন। ভুলেও যেন ভোট দেবেন না বরিস জনসনকে!’’
ঘোরতর কনজ়ারভেটিভ বিরোধী গ্রান্ট কখনওই তাঁর রাজনৈতিক মতাদর্শ রেখেঢেকে রাখেন না। বরিস জনসন ক্ষমতায় আসার পরেই একটি চাঁচাছোলা টুইট করে ৫৯ বছরের এই অভিনেতা জনসনের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা (এনএইচএস) সংক্রান্ত নীতির কড়া সমালোচনা করেছিলেন। ব্রেক্সিটের ডামাডোলে ডিসেম্বরে হঠাৎ নির্বাচন ঘোষণার পরে জল্পনা শুরু হয়েছিল— এ বার কি তা হলে সক্রিয় রাজনীতিতে পা দিচ্ছেন গ্রান্ট? লিবারাল ডেমোক্র্যাটদের হয়ে ভোটে লড়বেন তিনি? গ্রান্ট রসিকতা করে হলেছিলেন, ‘‘ভোটে আমি দাঁড়াবে না কারণ, সব সময়ে তো দলের কথা শুনে চলতে পারব না। এই বয়সে দলীয় অনুশাসন মেনে চলা সম্ভব নয়!’’ তবে লিবারাল ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের হয়ে তিনি প্রচার করবেন বলে জানিয়েছিলেন গ্রান্ট। এমনকি, ব্রেক্সিট-বিরোধী লেবার প্রার্থীদের হয়েও প্রচার করতে তিনি উৎসুক, বলেছিলেন অভিনেতা।
সোমবার ওয়েস্টমিনস্টারের লিবারাল ডেমোক্র্যাট প্রার্থী চুকা উমান্নার হয়ে প্রচার করেন গ্রান্ট। বলেন, ‘‘কনজ়ারভেটিভরা যাতে কিছুতেই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়, তার জন্য আমাদের প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। কারণ শেষ পর্যন্ত যদি ব্রেক্সিট হয়, তা হলে ব্রিটিশ অর্থনীতির শোচনীয় অবস্থা হবে। প্রধানমন্ত্রী ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যে মুক্ত বাণিজ্যনীতির কথা বলছেন, তা আদপেই বাস্তবোচিত নয়। জাতীয় বিপর্যয় রুখতেই আপনাদের ভেবেচিন্তে ভোট দিতে বলছি।’’
‘লাভ, অ্যাকচুয়ালি’ ছবিতে ধান্দাবাজ মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে গলা চড়িয়েছিলেন গ্রান্ট অভিনীত সদ্য নির্বাচিত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। আর প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সখ্য তো সর্বজনবিদিত। গ্রান্ট তাঁর বরিস-বিরোধী প্রচার শুরু করার পরে অনেকেই তাই বলতে শুরু করেছেন, জনসন নয়, ব্রিটেনের স্বার্থ রক্ষা করতে দরকার গ্রান্টের মতো এক জন নেতা।
প্রায় একশো বছর পরে ডিসেম্বরে ছুটির মরসুমে ভোটের সাজে সাজবে ব্রিটেন। ‘‘ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে, বরিসের বিরুদ্ধে ভোট দিন,’’ ভোটারদের আর্জি গ্রান্টের। ‘‘শুভ বড়দিন বলার এমন একটা সুযোগ হারাবেন না!’’