সংগৃহীত ছবি।
জলে সাঁতার কাটছে একটি অতিকায় সি লায়ন। আর সেটির দিকে খাবার ছুড়ে দিচ্ছে একটি ছোট্ট মেয়ে। এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। আচমকা ছন্দপতন। জল থেকে লাফিয়ে উঠে মেয়েটির জামা কামড়ে ধরল বিশাল প্রাণিটি। তারপর এক ঝটকায় টেনে নিয়ে গেল জলের মধ্যে। মেয়েটির চিৎকারে জলে ঝাঁপিয়ে তাকে উদ্ধার করে আনে এক ব্যক্তি।
গোটা ঘটনাটি ঘটেছে কানাডার পশ্চিম উপকূলে রিচমন্ডের একটি বন্দর এলাকায়। ভ্যাঙ্কুভারের বাসিন্দা মাইকেল ফুজিয়ারা পুরো ভিডিওটি রেকর্ড করেন। তাঁর কথায়, “জলের মধ্যে একটি অতিকায় পুরুষ সি-লায়নকে ঘুরে বেড়াতে দেখে ভিডিও করা শুরু করি। কিন্তু এই রকম ঘটনা ঘটবে কে জানত? গত এক সপ্তাহ ধরে নিয়মিত ওই বন্দর এলাকায় যাচ্ছি। রোজই সি-লায়ন দেখি। কিন্তু এই রকম অভিজ্ঞতা জীবনে প্রথম। আমি স্তম্ভিত।” তিনি জানান, প্রাণিটিকে দেখে সবাই বেশ মজা পাচ্ছিল। জলের কাছে ভিড় জমে গিয়েছিল। আর সবচেয়ে বেশি উত্তেজিত ছিল বাচ্ছা মেয়েটি। ঘুরে ফিরে সে বারেবারেই জলের কাছে যাচ্ছিল এবং প্রাণিটির দিকে পাঁউরুটির টুকরো ছুড়ে ছুড়ে দিচ্ছিল।
ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামুদ্রিক প্রাণি বিশেষজ্ঞ অ্যান্ড্রু ট্রিটস কিন্তু সি-লায়নটিকে মোটেই দোষ দিতে রাজি নন। তাঁর মতে, “এই ঘটনার জন্য কিছু মানুষের নির্বুদ্ধিতাই দায়ী। প্রাণিটি ছিল ক্যালিফোর্নিয়ার একটি অতিকায় পুরুষ সি-লায়ন। এই ধরনের প্রাণিরা সচরাচর মানুষের সংস্পর্শে আসে না। জলজ পরিবেশেই এরা বেশি স্বচ্ছন্দ। তাই মেয়েটির সাদা জামাকে কোনও খাবার বলে মনে করেছিল প্রাণিটি। তাই জল থেকে লাফিয়ে উঠে জামার একটি অংশ ধরে টান দেয়।” এই ভাবে খাবার ছোড়াও উচিত নয় বলে মনে করেন তিনি।
আরও পড়ুন: হাজার হাজার মানুষকে বাঁচতে শেখাচ্ছে ছোট্ট মেয়েটি
ট্রিটস জানান, সি-লায়নেরা মোটেই হিংস্র নয়। মানুষের সঙ্গে এদের কোনও শত্রুতাও নেই। এই ঘটনার থেকেই মানুষের শিক্ষা নেওয়া উচিত। সামুদ্রিক প্রাণীদের তাদের মতো করেই বাঁচতে দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। ট্রিটসের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য প্রাণী বিশেজ্ঞেরাও। তাঁদের মতে, কখনই এই ভাবে খাবার বা অন্য কিছু জলের মধ্যে ছুড়ে সামুদ্রিক প্রাণিদের বিরক্ত করা উচিত নয়। মানুষকে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। না হলে এই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটতে থাকবে।