—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি। সংবাদ সংস্থা এপি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবারের এই হামলায় তিন নাবিকের মৃত্যু হয়েছে। আহত অন্তত ৬ জন। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরেই জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। নাবিকদের উদ্ধার করতে ছুটে যায় আমেরিকার একটি যুদ্ধজাহাজ এবং ভারতীয় নৌসেনা। তবে জাহাজে ঠিক কত জন নাবিক এবং কর্মী ছিলেন, এখনও স্পষ্ট নয়। একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময়ে জাহাজে মোট ২৩ জন ছিলেন।
হুথির ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা প্রথম প্রকাশ্যে আনে আমেরিকার সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড। জানা যায়, বার্বাডোজ়ের পতাকাবাহী এবং লাইবেরিয়ার একটি সংস্থার মালিকানাধীন ‘ট্রু কনফিডেন্স’ নামের ওই জাহাজে হামলা চালানো হয়। হামলাটি চালানো হয় ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত অংশ থেকেই। জাহাজটিতে ফিলিপিন্সের ১৫ জন, শ্রীলঙ্কার দু’জন এবং ভারতের এক নাগরিক ছিলেন বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
হামলার নেপথ্যে যে হুথি রয়েছে, এই বিষয়ে গোড়া থেকেই সন্দেহ না থাকলেও পরে নিজেরাই দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। হুথির বিবৃতিতে বলা হয়, ইয়েমেনের এডেন বন্দর থেকে ৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে ‘নিখুঁত লক্ষ্যে’ হামলা চালানো সম্ভব হয়েছে। হুথির তরফে এ-ও দাবি করা হয়েছে যে, হামলা চালানোর আগে জাহাজটিকে সতর্ক করেছিল তারা। কিন্তু সেই সতর্কতা না কি উপেক্ষা করা হয়। কিন্তু কেন এই জাহাজটির উপরে হামলা চালানো হল, তা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে হামলার সম্ভাব্য কারণ হিসাবে যে বিষয়টি উঠে আসছে, তা হল আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলসের একটি সংস্থা আগে ‘ট্রু কনফিডেন্স’ নামের জাহাজটির মালিক ছিল। হুথির আমেরিকা-বিরোধী অবস্থান থেকেই এই হামলা বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
গত অক্টোবর মাসে ইজ়রায়েল-হামাস সংঘাত শুরু হওয়ার পরেই লোহিত সাগরে একের পর এক বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালাতে শুরু করে হুথি। তাদের বক্তব্য, প্যালেস্টাইন জুড়ে ইজ়রায়েলের ‘গণহত্যা’ বন্ধ না করলে এবং যুদ্ধবিরতির পথে না হাঁটলে, তারা লোহিত সাগরের জলপথকে অশান্ত করেই রাখবে। গোড়া থেকেই হুথিকে সমর্থন করে আসছে ইরান। মাঝে আমেরিকা-সহ পশ্চিমের সাতটি দেশ একজোট হয়ে হুথির ডেরায় পাল্টা হামলা চালিয়েছিল। তবে তা যে খুব একটা ফলপ্রসূ হয়নি, বুধবারের ঘটনাই তার প্রমাণ।