প্রতীকী চিত্র।
‘ড্রিমার্স’-সহ ২০ লক্ষেরও বেশি অনথিভুক্ত অভিবাসীদের মার্কিন নাগরিকত্বের পথ মসৃণ করতে মঙ্গলবার বিল পাশ হল ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ।
‘ড্রিমার’ বলতে যাঁরা শৈশবে বাবা-মায়ের সঙ্গে বা অন্য কোনও ভাবে আইনের ফাঁক গলে মার্কিন মুলুকে এসে পড়েছিলেন। ‘ড্রিমার’দের কথা মাথায় রেখেই ২০১২ সালে ‘ডাকা’ (ডেফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস) প্রকল্পটি চালু করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। যার সুবাদে আমেরিকায় কাজ করার অনুমতি পেয়েছিলেন ‘ড্রিমার’দের অনেকেই। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে ২০১৭ সালের শেষের দিকে বাতিল করে দেন ‘ডাকা’ প্রকল্প।
মঙ্গলবার ‘আমেরিকান ড্রিম অ্যান্ড প্রমিস অ্যাক্ট অব ২০১৯’ নামে নয়া বিলটি ডেমোক্র্যাটদের হাত দিয়ে পাশ হওয়ার ফলে ‘ড্রিমার’রা আবার ১০ বছরের জন্য আমেরিকার মাটিতে বসবাসের আইনি অনুমতি পাবেন। তবে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। তার পরে তাঁরা দু’বছর উচ্চশিক্ষা নিলে অথবা সেনাবাহিনীতে কাজ করলে অথবা তিন বছর কর্মরত থাকলে গ্রিন কার্ড পেতে পারেন। এতে উপকৃত হবেন লক্ষ লক্ষ ড্রিমার। ট্রাম্প শেষ ভরসাটুকুও কেড়ে নেওয়ার পরে এখন যাঁদের আশার আলো শুধু সুপ্রিম কোর্ট। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা।
ডেমোক্র্যাটরা এই বিলের হয়ে সরব হচ্ছেন কারণ ট্রাম্প এবং রিপাবলিকান সদস্যরা কেবলই বুঝিয়ে চলেছেন, মেক্সিকো সীমান্তের সঙ্কটে বেশি জোর দেওয়া দরকার। অভিবাসন প্রক্রিয়া সংস্কারের ক্ষেত্রে দুই দলের অবস্থানে তাই অনেকটাই ফারাক রয়েছে। কাল হাউসে বিল পাশের পরে হাউসের সদস্য জো নিগুস (যাঁর বাবা-মা পূর্ব আফ্রিকার এরিট্রিয়ার শরণার্থী) হাততালি দিয়ে সমর্থন জানান। হাউসেও তখন খুশির হাওয়া, সমস্বরে সবাই বলছেন, ‘‘ইয়েস, উই ক্যান।’’ প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগানকে উদ্ধৃত করে নিগুস বলেন, অভিবাসন আমেরিকার অবিচ্ছেদ্য অংশ। নিগুস বলেন, ‘‘আমাদের দেশের অগুনতি সেই সব যুবক যুবতী, যাঁরা আমেরিকা ছাড়া আর কোথাও তাঁদের বাড়ি রয়েছে বলে ভাবতেই পারেন না— সেই তরুণ প্রজন্মকে ভয় আর ঝুঁকির মধ্যে থাকতে দেওয়া উচিত নয় আমাদের।’’
হাউসের বিচার বিভাগীয় কমিটির শীর্ষ রিপাবলিকান সদস্য ডগ কলিন্স বলেন, ‘‘ডাকা প্রার্থীদের ডেমোক্র্যাটরা যে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন, তা বোঝানোর একটা সুযোগ পেলেন। ‘ড্রিমার’দের সুরক্ষা দেওয়ার কথা ওঁরা বরাবরই বলে এসেছেন। তবে এ বারের বিলটি রাজনৈতিক বার্তা বহন করে।’’ হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, ‘‘এই বিলটি নিয়ে কোনও রাজনীতি নয়।’’
কিন্তু এই বিল ডেমোক্র্যাটরা হাউসে পাশ করিয়ে নিলেও এটি দ্রুত আইনে পরিণত হবে, এমন ভাবা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মত, আগামী বছরেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। যদিও বা বিলটি রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সেনেটে পাশ হয়ে যায়, শেষমেশ এতে প্রেসিডেন্টের সই লাগবেই। ‘ড্রিমার’দের প্রকল্প বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে ট্রাম্প, তিনি এই বিলে সই করবেন না, তা সহজেই অনুমেয়। মাত্র মাসখানেক আগেই অভিবাসন ব্যবস্থার সংস্কারের কথা ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। তাঁর জামাই এবং উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার এই বিষয়ে নানা কথা বলেছেন। কিন্তু তাঁদের প্রকল্পেও ‘ডাকা’-র কোনও উল্লেখ ছিল না।
অস্ত্র বিক্রিতে আপত্তি: জরুরি ক্ষমতা প্রয়োগ করে সৌদি আরব ও কয়েকটি দেশে ৮১০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তার বিরোধিতায় ডেমোক্র্যাটদের মতোই সরব লিন্ডসে গ্রাহামের মতো রিপাবলিকান সেনেটর। জামাল খাশোগি খুনের প্রেক্ষিতে সৌদি যুবরাজ সলমনকে নিয়ে যেমন তাঁদের আপত্তি, তেমনই আশঙ্কা, ওই অস্ত্রের শিকার হবেন ইয়েমেনের মানুষ।