ভস্মীভূত: বোল্ডার কাউন্টির কাছে হেলিকপ্টার থেকে তোলা ছবি। পিটিআই।
বছর শেষে দাবানলের জেরে আমেরিকার কলোরাডো প্রদেশের বহু ঘরবাড়ি পুড়ে খাঁক। গত কাল প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ঘরবাড়ি, শপিং মল এবং হোটেল মিলিয়ে মোট ৫৮০টি ভবন ভস্মীভূত হয়েছে। বড় বিপর্যের মধ্যেই উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এখনও পর্যন্ত কোনও প্রাণহানির খবর মেলেনি। তবে আহত হয়েছেন অন্তত ৬ জন। আগুনের লেলিহান গ্রাস থেকে বাঁচতে ইতিমধ্যেই ঘর ছেড়েছেন হাজারদশেক মানুষ।
গভর্নর জারেড পোলিস জানান, বহু পরিবারই কোনও রকম প্রস্তুতি ছাড়াই ছোটদের এবং পোষ্যদের গাড়িতে চাপিয়ে পালিয়ে বেঁচেছেন। তবে ছাই হয়ে গিয়েছে সমস্ত সম্পত্তি। পোলিস জানান, তিনি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। প্রেসিডেন্ট গোটা ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিপর্যয় ঘোষণা করেছেন। ওই অঞ্চলের অধিবাসী এবং ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তাও দিয়েছেন বাইডেন।
দাবানলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ডেনভার ও বোল্ডার কাউন্টির মধ্যবর্তী দুই শহর লুইভিল, সুপিরিয়র। দাবানলের গ্রাসে ডেনভারের একাংশও। বোল্ডার কাউন্টির শেরিফ জো পেল জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনায় সাধারণ ভাবে বহু মানুষ নিখোঁজ হয়ে যান। কিন্তু এ বারে তেমন ঘটনা খুব বেশি নেই। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, দাবানলের উৎপত্তি কী ভাবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে প্রাথমিক অনুমান, বিদ্যুতের তার থেকে আগুন লাগে। সেই আগুনই সর্বগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে।
পেল জানিয়েছেন, ঘণ্টায় ১৬৯ কিলোমিটার গতিবেগে বয়ে চলা বাতাসের দাপটে দাবানল আরও বিধ্বংসী রূপ নিতে পারে। তার জেরে আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এমনকি প্রাণহানির আশঙ্কাও থাকছে। ইতিমধ্যেই দাবানলের কবলে ২৪.৩ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং তার জেরে জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবেই আবহাওয়া চরম আকার ধারণ করছে। তারই পরিণাম ঘন ঘন দাবানলের ঘটনা। আমেরিকান সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্স দাবি করেছেন, শুধু গালভরা প্রতিশ্রুতি নয়, জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে কড়া পদক্ষেপ করতেই হবে।
হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, হাওয়ার দাপট কিছু কমেছে। শুরু হয়েছে তুষারপাত। আশা করা হচ্ছে, দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। কলোরাডো প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দাবানলের জেরে যে সমস্ত মানুষ ভিটে ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।