কোভিড-বিধি না মানায় পুলিশের হাতে ধৃত এক যুবক। চিলির সান্টিয়াগোতে। ছবি রয়টার্স।
কোভিড রোগী সামাল দিতে নাজেহাল ব্রাজিলের হাসপাতালগুলি অক্সিজেনের অভাবে ধুঁকছে। সংক্রমণের নয়া ঢেউয়ে বিপর্যস্ত দেশটির সিংহভাগ হাসপাতালের আইসিইউতে শয্যা নেই। নেই অক্সিজেনের জোগান। পরিস্থিতি এমনই যে বদলি করতে হচ্ছে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের। ‘প্যান আমেরিকান হেলথ অরগানাইজ়েশন’ জানিয়েছে, ব্রাজিলের অবস্থা ‘শোচনীয়’। গত কালই দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ২৫১। মার্চের এই পরিস্থিতি এপ্রিলেও বদলাবে না বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
কোভিড-আক্রান্তের নিরিখে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে মোট সংক্রমিত ৩ লক্ষ ছুঁয়েছে। বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, করোনার অতিসংক্রামক ‘ব্রাজিল স্ট্রেন’ এই অবস্থার জন্য দায়ী। আমাজ়ন অঞ্চলে প্রথম ধরা পড়া ওই স্ট্রেন এখন ছড়িয়ে পড়েছে বহু দেশে। তার পরেও সম্বিত ফেরেনি দেশটির প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর। দেশের মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া থেকে শুরু করে পারস্পরিক দূরত্ববিধি মানার বিষয়ে সতর্কতা বা ব্যবসা-বাণিজ্য স্থগিত রাখা—সব বিষয়েই প্রবল অনিহা দেখিয়ে এসেছেন তিনি। তবে প্রেসিডেন্টের আপত্তি সত্ত্বেও গত বছর লকডাউন জারি করেছিলেন এমন অনেক প্রদেশের গভর্নরেরা সম্প্রতি ফের লকডাউন চালু করেছেন। চলতি মাস থেকে বোলসোনারো টিকা নিয়ে কিছুটা মত বদলালেও করোনা-বিধি নিয়ে এখনও উদাসীন তিনি। এমনকি হাসপাতালগুলির অক্সিজেন সঙ্কট কাটাতেও কোনও আশ্বাস শোনাননি প্রেসিডেন্ট। আইসিইউয়ের শয্যা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রদেশের গভর্নরদের আর্থিক বরাদ্দ বাড়ানোর কোনও প্রতিশ্রুতি শোনা যায়নি তাঁর মুখে। একটি রিপোর্টে প্রকাশিত, ব্রাজিলের ২৬টি প্রদেশ ও ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট মিলিয়ে মোট ১৮টি হাসপাতালের ৯০ শতাংশ শয্যা ভর্তি। বেশ কিছু প্রদেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। চলতি বছরের শেষে গিয়েও দেশের সব মানুষের টিকাকরণ হবে কি না সংশয় রয়েছে।
প্রতিষেধক নিয়ে প্রচারে তাঁর সরকারের ব্যর্থতা স্বীকার করে টিকাকরণ কর্মসূচির গতি বাড়ানোর আর্জি জানালেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ। বুধবার এক সাক্ষাৎকারে মাকরঁ স্বীকার করেন, ‘‘আমরা মোটেই দ্রুত (টিকাকরণে) এগোতে পারিনি। ততটা জোরও দিতে পারিনি।’’ তাঁর কথায়, টিকাকরণ নিয়ে প্রচার বর্তমানে ‘জাতীয় অগ্রাধিকার’। গত সপ্তাহে গ্রেটার প্যারিস ও নিস-সহ ফ্রান্সের ১৬টি প্রদেশে নতুন করে বিধিনিষেধ জারি করেছে ফরাসি সরকার। সামাজিক সমাবেশে ছ’জনের বেশি একত্রিত হওয়া বর্তমানে বেআইনি ফ্রান্সে। লকডাউনের অধীনে থাকা ১৬টি প্রদেশ নিয়ে ‘অত্যন্ত কঠোর’ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে।