বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন মারাত্মক ঘটনায় ন্যূনতম শাস্তি পেয়ে ছাড়ও পেয়ে যেতে পারেন টিবার বাবা। ছবি : টুইটার থেকে।
ইউটিউবার মেয়ে ‘লজ্জার কারণ’ হয়ে দাঁড়াচ্ছিল! তাই তাঁকে নিজে হাতে খুন করলেন বাবা। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই হই চই পড়ে গিয়েছে ওই ইউটিউব প্রভাবীর ভক্তমহলে।
গত ৩১ জানুয়ারি এই ঘটনা ঘটে ইরাকে। পুলিশ জানিয়েছে মেয়েকে খুন করার পর তা নিজেই স্বীকার করেছেন বাবা। খুন করার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ‘‘লজ্জা ধুয়ে ফেললাম।’’
পুলিশ জানিয়েছে, দিন কয়েক আগে থেকেই অশান্তি চলছিল টিবার বাড়িতে। সেই অশান্তি এতটাই গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, পুলিশকে বেশ কয়েকবার যেতে হয়েছিল টিবার বাড়িতে। সেই সময় টিবার আত্মীয়দের বুঝিয়েও আসেন পুলিশ কর্তারা। টিবার মৃত্যুর খবরে তাঁরা বলেছেন, ‘‘আমরা শুনে বিস্মিত হয়ে গিয়েছি। এমনটা যে হতে পারে ভাবতেই পারিনি। জানলে হয়তো অন্য পদক্ষেপ করতাম।’’ ইরাকের আভ্যন্তরীন মন্ত্রী সাদ মানও এ বিষয়ে একটি বিবৃতি জারি করে বলেছিলেন, ‘‘টিবা আলি এবং তাঁর আত্নীয়দের সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান করার চেষ্টা করেছিল পুলিশ।’’ কিন্তু সেই সমাধান সূত্র যে কোনও কাজেই দেয়নি তা স্পষ্ট হয়ে যায় গত ১ ফেব্রুয়ারি সকালে টিবার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হওয়ার পর।
পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারে, গত ৩১ জানুয়ারি রাতে টিবাকে ঘুমের মধ্যেই শ্বাসরোধ করে খুন করেন তাঁর বাবা। তার পর গুলিও করেন মেয়েকে। ঘটনাটির খবর আগুনের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে এর পর। বিশ্বজুড়ে সামাজিক মাধ্যমে টিবার মৃত্যুর জন্য প্রতিবাদ জানিয়ে সুবিচার চেয়েছেন বহু মানুষ। টিবার মৃত্যুর প্রতিবাদ জানিয়ে পথে নেমেছেন ইরাকের মেয়েরাও।
তাঁরা বলেছেন, ‘‘আমাদের সমাজে মহিলারা আসলে কিছু পুরুষের ইগো আর পিছিয়ে পড়া রীতি রেওয়াজের খাঁচায় বন্দি। মেয়েদের বাঁচানোর জন্য যেহেতু যথাযথ আইন এবং সরকারি উদ্যোগের অভাব রয়েছে, তাই এ ভাবেই নিজেদের বাড়িতেই অত্যাচারিত হতে হয় মেয়েদের।’’
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন মারাত্মক ঘটনায় ন্যূনতম শাস্তি পেয়ে ছাড়ও পেয়ে যেতে পারেন টিবার বাবা। কারণ তিনি তাঁর স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছিলেন, পরিবারের সম্মান রক্ষা করতেই হত্যা করেছেন মেয়েকে। ইরাকে এখনও সম্মান রক্ষায় কোনও অপরাধ করলে অপরাধীকে কম সাজা দেওয়া হয়!