হিজ়বুল্লার প্রধান নইম কাশেম। —ফাইল চিত্র।
শত্রুর শত্রু আমার মিত্র! এই নীতির উপর ভর করেই সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের দিকে ‘বন্ধুত্বে’র হাত বাড়িয়ে দিল হিজ়বুল্লা। ইরানের মদতপুষ্ট লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজ়বুল্লার প্রধান নইম কাশেম জানান, সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের সাম্রাজ্য পতনের পর সে দেশ দিয়ে অস্ত্র আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থাও। এই পরিস্থিতিতে কাশেম আশাবাদী, নতুন প্রশাসন আবার তাঁদের জন্য সিরিয়ার রাস্তা খুলে দেবে!
ইরান থেকে লেবাননে হিজ়বুল্লার কাছে অস্ত্র-সহ বিভিন্ন সাহায্য এত দিন পৌঁছে যেত সিরিয়ার মধ্যে দিয়ে। বাশার জমানায় হিজ়বুল্লার সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল সিরিয়া প্রশাসনের। ইরানের সঙ্গেও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতেন বাশার। কিন্তু সিরিয়া বিদ্রোহীদের দখলে যাওয়ায় চাপে পড়েছে হিজ়বুল্লা। ইরানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ প্রায় ছিন্ন। এই অবস্থায় সিরিয়ার নতুন প্রশাসনকে পাশে চান হিজ়বুল্লা প্রধান।
বাশার সরকারের পতনের পর শনিবার কাশেম প্রথম বার মুখ খুললেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘সিরিয়ার মধ্যে দিয়ে আমাদের যে অস্ত্র সরবরাহের রুট ছিল, সেটা আমরা হারিয়েছি। আশা করছি, সিরিয়ার নতুন প্রশাসন ওই রুটটি আবার আমাদের জন্য চালু করবে।’’ যদি তা না-হয়, তবে ‘বিকল্প পথে’র ভাবনাও শুরু করে দিয়েছে হিজ়বুল্লা।
একই সঙ্গে সিরিয়ার নতুন প্রশাসনকে ইজ়রায়েলের থেকে দূরে থাকারও বার্তা দিয়েছেন কাশেম। তিনি বলেন, ‘‘আমি আশা করছি, সিরিয়ার নতুন কর্তৃপক্ষ ইজ়রায়েলকে তাঁদের শত্রু ভাববেন।’’
বাশার সরকারের পতনের পরই ইজ়রায়েল একের পর এক হামলা চালাচ্ছে সিরিয়ায়। সমগ্র গোলান মালভূমি-সহ দক্ষিণ সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ দখল হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। ধারাবাহিক বিমানহানায় ইজ়রায়েল ধ্বংস করে দিয়েছে সিরিয়ার অধিকাংশ সামরিক পরিকাঠামো। সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসের দিকে এগোচ্ছে ইজ়রায়েলি সেনা। সিরিয়ায় পালাবদলের পরেই নেতানিয়াহু সরকার জানিয়েছিল, সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা প্রতিরোধে একটি ‘নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল’ (বাফার জ়োন) গঠন করা হবে। আর তা হবে সিরিয়ার ভূখণ্ডে! ইজ়রায়েলি আক্রমণ নিয়ে সুর চড়িয়েছেন বিদ্রোহী বাহিনীর নেতা আবু মহম্মদ আল-জুলানি। ইজ়রায়েলি বিরোধিতায় সেই সুযোগই কাজে লাগাতে চাইছেন হিজ়বুল্লা প্রধান।