ছবি সংগৃহীত।
এই অতিমারির শেষ কোথায়? জবাবে অনেকেই বলতেন, ধীরে ধীরে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ তৈরি হয়ে যাবে। অর্থাৎ একটি বড় গোষ্ঠীর মধ্যে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে যাবে। যদিও বিজ্ঞানীদের একাংশ এখন বলছেন, পুরোটাই ‘কাল্পনিক’। পুরো গোষ্ঠী সংক্রমিত হয়ে গেলেও অতিমারি থামবে না। করোনার ডেল্টা স্ট্রেনের সংক্রমণ ক্ষমতা দেখেই তা বোঝা গিয়েছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডিপার্টমেন্ট অব পেডিয়াট্রিকস’-এর অন্তর্গত ভ্যাকসিন গবেষণা দলের প্রধান অধ্যাপক অ্যান্ড্রু পোলার্ড বলেন, ‘‘কোভিড ছড়ানো রুখতে ব্যর্থ ভ্যাকসিন। এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। হার্ড ইমিউনিটির বিষয়টিও এখন ‘কাল্পনিক তত্ত্ব’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
তিনি একটি আলোচনাসভায় বলেন, ‘‘আসলে সমস্যা হচ্ছে, এই ভাইরাসটি হাম নয়। কোনও জনগোষ্ঠীর ৯৫ শতাংশ বাসিন্দাকে যদি হামের টিকা দেওয়া হয়, ভাইরাস আর ছড়াতে পারবে না। ডেল্টা ভেরিয়েন্ট কিন্তু এর পরেও ছড়াবে। যাঁরা টিকা পেয়েছে, তাঁদের শরীরেও ছড়াবে। তার মানে কী... একে থামানোর কোনও পথ নেই!’’
কিছু দিন আগেই অবশ্য ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ১৮ থেকে ৬৪ বয়সসীমায় যাঁদের ভ্যাকসিন নেওয়া হয়ে গিয়েছে, তাঁদের সংক্রমিত হওয়ার ভয় অনেক কম। তুলনায় যাঁরা টিকা নেননি, তাঁদের করোনা-আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। যে কারণে পৃথিবীর সব দেশে টিকাকরণে জোর দেওয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ এ-ও বলছেন, যদি সংক্রমিতও হন, টিকা নেওয়া থাকলে বাড়াবাড়ি হবে না। হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে না।
ও দিকে ছোটদের জন্য ভয় ক্রমে বাড়ছে। বহু দেশেই স্কুল খুলে দেওয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সবচেয়ে বিপজ্জনক সময়ে স্কুল খোলা হচ্ছে। কারণ বড়দের টিকাকরণ হলেও ছোটদের এখনও হয়নি। টিকা-হীন অবস্থায় ছোটদের ঝুঁকি বেশি। এবং এ বারের ঢেউয়ে তারাই আক্রান্ত হবে বেশি।
আমেরিকায় যেমন স্কুল খুলছে। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হচ্ছে। চিকিৎসক লেনা ওয়েন বলেন, ‘‘এ দেশে ডেল্টা সংক্রমণ এ ভাবে বাড়ছে। বড়রা নিয়ম মানছেন না। কেউ টিকা নিচ্ছেন না, কেউ মাস্ক পরছেন না। এতে ভাইরাস আরও ছড়াবে। আরও শক্তি বাড়াবে। এবং সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে ছোটদের।’’ আমেরিকায় ১২ বছরের নীচের বাচ্চারা এখনও টিকা পায়নি। অন্য বহু দেশে ১৮-র নীচেই টিকা অমিল।
আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আজ বলেন, ‘‘আমি খুবই উদ্বেগে রয়েছি। যে সব অঞ্চলে প্রাপ্তবয়স্করা টিকা নিচ্ছেন না, সেখান থেকেই ছোটদের সংক্রমিত হওয়ার খবর আসছে। বড়দের থেকেই তারা আক্রান্ত হচ্ছে।’’