তৃষ্ণা মেটাতে ভরসা পানীয়। নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিন ব্রিজে। ছবি রয়টার্স।
তাপপ্রবাহে বিধ্বস্ত কানাডা থেকে শুরু করে আমেরিকা। দু’দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে রেকর্ড ছাপিয়ে যাচ্ছে তাপমাত্রা। পরিস্থিতি এমনই যে এই ঠান্ডা দেশগুলির তাপমাত্রার সঙ্গে ভারতীয় উপমহাদেশের দেশগুলির তুলনা টানছেন স্থানীয়েরা। এ দিকে বিজ্ঞানীদের বার্তা, এ তো সবে শুরু! দিন দিন আরও গরম বাড়বে এই অঞ্চলগুলিতে। বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনই এর জন্য দায়ী, জানাচ্ছেন তাঁরা। অন্য দিকে, প্রবল বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত জার্মানি ও সুইৎজ়ারল্যান্ডের মতো ইউরোপীয় দেশগুলির একাংশ।
কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া অঞ্চলের একটি ছোট গ্রাম লিটন। সোমবার সেখানে তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ৪৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা ১৯৩৭ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে বলে জানাচ্ছেন আবহবিদেরা। গত কাল আমেরিকার পোর্টল্যান্ড শহরের তাপমাত্রাও পৌঁছে যায় ৪৬ ডিগ্রিতে। ওরেগন প্রদেশের সালেমে সোমবার তাপমাত্রা ছিল ৪৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সিয়্যাটলের তাপমাত্রাও রেকর্ড গড়েছে কাল।
রোদে পুড়তে থাকা এই অঞ্চলগুলির বেশির ভাগেরই আবহাওয়া আদতে শীতল। নিয়মিত বৃষ্টির সঙ্গেও পরিচিত এলাকাবাসীরা। তবে সূর্যের দেখা পাওয়া খুব একটা সহজ ছিল না যে-সব এলাকায় সেখানেই এখন কাঠফাটা রোদ! আর পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমতো কালঘাম ছুটেছে এলাকাবাসীদের। বাজারে এয়ার কন্ডিশনার প্রায় অমিল। বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে বরফও! অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে থাকা তাপমাত্রার সঙ্গে তাল রাখতে পারছে না রান্নাঘরের ভেন্টগুলি। যে কারণে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক বার এবং রেস্তরাঁ। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন মানুষ। কর্মচারীদের জন্য ‘কুলিং সেন্টার’ খুলেছে কিছু কিছু সংস্থা। যেখানে অফিসের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে গিয়ে পরিবার-সহ আশ্রয় নিয়েছেন কর্মচারীরা। সম্প্রতি কোভিড সংক্রান্ত বিধি শিথিল করে ওরেগনে সুইমিং পুল খোলার অনুমতি দিয়েছিল প্রশাসন। তবে গরম থেকে বাঁচতে সেখানে ভিড় জমাতে শুরু করেন বাসিন্দারা। তাঁদের অনেকের শরীরেই ফোস্কা জাতীয় সমস্যা দেখা দেওয়ায় শেষমেশ পুলগুলি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন কর্তৃপক্ষ।
জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে যুঝতে হচ্ছে জার্মানি, সুইৎজ়ারল্যান্ডের মতো ইউরোপীয় দেশগুলিকেও। মরসুমের স্বাভাবিক ছন্দ বিগড়ে দিয়ে কাল রাতে সেখানে ভারী বৃষ্টি হয়। কিছু কিছু জায়গাতে শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। সঙ্গে চলেছে দমকা হাওয়া। এর জেরে সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে হয় জার্মান শহর স্টুটগার্টের রেল পরিষেবা। কয়েকটি রাস্তায় হাঁটু পর্যন্ত জল জমেছে। সুইৎজ়ারল্যান্ডের নটউইলে সাত সেন্টিমিটার লম্বা শিল পড়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রের খবর।