১৭৬ বছর ধরে কাচের জারে বন্দি এক ব্যক্তির কাটা মুণ্ড! কে এই ব্যক্তি? কেনই বা বন্দি করে রাখা হয়েছে তার মুণ্ড? এর পিছনে কাহিনি শুনলে চমকে উঠবেন। কী সেই কাহিনি? জেনে নেওয়া যাক।
নাম দিয়োগো আলভেজ। ১৮১০ সালে স্পেনে জন্ম। কাজের তাগিদে দেশ ছেড়ে পর্তুগালে চলে আসে দিয়োগো। তখন তার বয়স ১৯।
কিন্তু যে কারণে পর্তুগালে আসা, সেটাই করতে পারেনি সে। হন্যে হয়ে কাজ খুঁজে বেরিয়েও শেষমেশ হতোদ্যম হতে হয় তাকে। আর এই হতাশা থেকে ধীরে ধীরে নেশার জগত এবং সেখান থেকে অপরাধ জগতে নাম লেখায় সে। প্রতীকী ছবি।
ছোটখাটো অপরাধ দিয়ে হাত পাকানো শুরু করে। তার পর চুরি, ডাকাতি, রাহাজানির মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে সিরিয়াল কিলার হয়ে ওঠে সে। গোটা লিসবনে সাড়া ফেলে দিয়েছিল সে। প্রতীকী ছবি।
১৮৩৬ থেকে ১৮৪০-এর মধ্যে ৭০টি খুন করে সে। তার শিকারের তালিকার বেশিরভাগটাই ছিল কৃষক। সারাদিন কাজ শেষে ওঁরা যখন বাড়ি ফিরতেন, লিসবন নদীর সেতুর উপরে দাঁড়িয়ে থাকত দিয়োগো। তাঁদের লুঠ করার পর দেহ টুকরো টুকরো করে নদীতে ভাসিয়ে দিত। প্রতীকী ছবি।
গ্রাম থেকে এক এক করে কৃষক নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছিল রহস্যজনক ভাবে। তাঁরা আর্থিক অনটনে আত্মঘাতী হচ্ছেন এমনটাই রটে যায় এলাকায়। কিন্তু নিখোঁজের সংখ্যাটা যখন বাড়তে শুরু করে তখন পুলিশের সন্দেহ হয়, এর পিছনে অন্য কোনও কারণ অবশ্যই আছে। প্রতীকী ছবি।
পুলিশ খুনির সন্ধান শুরু করতেই দিয়োগো বুঝতে পারে এ বার সে ধরা পড়বে। তাই তিন বছরের জন্য ‘নিরুদ্দেশ’ হয়ে যায় সে। বিষয়টি একটু ঠান্ডা হতেই ফের খুন করা শুরু করে দিয়োগো। একটা গ্যাংও তৈরি করে ফেলে সে। প্রতীকী ছবি।
ধীরে ধীরে বিশাল নেটওয়ার্ক তৈরি করে ফেলে সে। যথেচ্ছ লুঠপাট, খুন করতে থাকে সে ও তার গ্যাং। এই সময়ই এক ডাক্তার ও তাঁর পরিবারকে খুন করাটাই তার কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। দিয়োগোর তল্লাশি চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রতীকী ছবি।
আদালতে দিয়োগো স্বীকার করে ৭০ জনকে নিষ্ঠুর ভাবে খুন করেছে সে। তার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পর আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। প্রতীকী ছবি।
কী ভাবে এত নিষ্ঠুরতার সঙ্গে খুন করত দিয়োগো, তা জানতে উত্সুক হয়ে ওঠে মেডিক্যাল-সার্জিক্যাল স্কুল অব লিসবন-এর বিজ্ঞানীরা। তার মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণা করার জন্য ফাঁসির পর দিয়েগোর মুণ্ড কাটা হয়। প্রতীকী ছবি।
তবে বহু গবেষণার পরও বিজ্ঞানীরা দিয়েগোর নিষ্ঠুরতার রহস্য ভেদ করতে পারেননি। দিয়োগোর সেই মুণ্ডই কাচের জারে সংরক্ষিত করা আছে লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানাটমিক্যাল থিয়েটারে। প্রতীকী ছবি।