স্কট পার্কার। ছবি: টুইটার।
ধৈর্যের ফল পেলেন স্কট পার্কার। ব্রিটেনের প্রথম পুরুষ মা হিসাবে ইতিহাস গড়লেন। ১৬ জুন গ্লচেস্টারশায়ার রয়্যাল হাসপাতালে জন্ম নিল তাঁর কন্যাসন্তান। এবং আর পাঁচটা স্বাভাবিক শিশুর মতোই সুস্থ আছে নবজাতক ট্রিনিটি।
২৩ বছরের স্কট পার্কার একজন রূপান্তরিত পুরুষ। তাঁর আগে নাম ছিল হেডেন ক্রস। বছর দুয়েক আগে পশ্চিম লন্ডনের চ্যারিং ক্রস হাসপাতালে তিনি লিঙ্গ পরিবর্তন করে পুরুষ হন। পুরুষ হিসাবে আইনি স্বীকৃতিও পান। কিন্তু মন থেকে পুরুষ হলেও বরাবর স্কট মা হতে চেয়েছেন। নারী থেকে পুরোপুরি পুরুষে রূপান্তরিত হয়ে গেলে এই ইচ্ছাটা তাঁর অপূর্ণই থেকে যেত। তাই রূপান্তরের সময় তিনি ন্যাশনাল হেলথ্ সার্ভিস (এনএইচএস)-এর কাছে নিজের ডিম্বানু সংরক্ষণ করে রাখার অনুরোধ জানান। কিন্তু তাঁর সেই প্রস্তাবে রাজি হয়নি এনএইচএস।
হার মানেননি স্কট। ইচ্ছা পূরণ করতে তাই মাঝ পথেই তাঁর রূপান্তরের প্রক্রিয়া থামিয়ে রাখেন। স্তন এবং ডিম্বাশয়ের পরিবর্তন স্থগিত করে দেন। ফেসবুকের মাধ্যমে এক স্পার্ম ডোনারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার পর নিজের গর্ভেই ধারণ করেন সন্তান।
গত বুধবার গ্লচেস্টারশায়ার রেজিস্টার অফিসে মেয়ে ট্রিনিটির জন্ম নথিভুক্ত হয়। সেখানে স্কটকে তাঁর মা হিসাবেই দেখানো হয়েছে। শিশুর বাবার নামের জায়গাটা ফাঁকাই।
পুরুষ মা হওয়ার পথটা স্কট এবং তাঁর পরিবারের কাছে যতটা আনন্দের ছিল, ততটা ভয়েরও ছিল। কারণ অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন অচেনা নম্বর থেকে হুমকি দেওয়া হত তাঁকে। কে বা কারা তাঁকে হুমকি দিতেন তা জানেন না স্কট। তবে তাঁর গর্ভে বেড়ে ওঠা সন্তানের জন্য ভয় পেতেন তিনি।
আরও পড়ুন: কুমিরকে বিয়ে করলেন মেয়র!
স্কটের কথায়, তিনি প্রথম থেকেই বায়োলজিক্যাল মা হতে চেয়েছিলেন। তার উপর একটা বার্তাও দিতে চেয়েছিলেন সমাজকে। উদ্দেশ্য- তাঁর মতো রূপান্তরকামীদের যাতে আরও সহজভাবে মেনে নেয় এই সমাজ। মা হওয়ার ইচ্ছে পূরণ হয়েছে। এ বার নিজের রূপান্তরের বাকি প্রক্রিয়া শেষ করবেন। কিন্তু কবে, তা নিয়ে স্কটের মতামত জানা যায়নি।