বিশাল একটা গুহা। স্বচ্ছ স্ফটিকের দ্যুতিতে ঝলমল করছে গুহার দেওয়াল। তার কোনওটা লম্বা, কোনওটা চওড়া। কোথাও আবার লাঠির মতো অংশ, যার গা বেয়ে চুঁইয়ে পড়ছে জল। এগুলি সবই নুনের তৈরি।
ডেড সির কাছেই বিশ্বের দীর্ঘতম সল্ট কেভ বা নুনের গুহা আবিষ্কার করেছেন, দাবি গবেষকদের। এর আগে ইরানের নামাকদান গুহার দখলে ছিল এ রেকর্ড।
ইজরায়েলে অবস্থিত এই গুহাটির নাম মালহাম। মাটির নীচে ১০ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত এটি। এর ব্যাপ্তি এতটাই যে, একে আস্ত দেশ বলা শুরু করেছেন বিজ্ঞানীদের একাংশ।
১০০টিরও বেশি কক্ষ রয়েছে গুহায়। একটি কক্ষ আবার প্রায় ৫,৬৮৫ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত।
গুহাটি ইজরায়েলের বৃহত্তম সোদম পাহাড় বেয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কাছে মৃত সাগর বা ডেড সিতে গিয়ে শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
দু’বছর আগে ইজরায়েলের ইয়োয়াভ নেগেভ ফ্রামকিন এই গুহা খোঁজার অসমাপ্ত কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেন। এতে তিনি বুলগেরিয়ার গুহা গবেষকদের অন্তর্ভুক্ত করেন।
ইউরোপীয় ৮টি এবং স্থানীয় ২০টি, মোট ২৮টি দল নিয়ে নেগেভ একটি টিম তৈরি করেন। এ দলের সঙ্গে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক বোয়াজ ল্যান্ডফোর্ড ও তার দল। ১৫০০ দিন ধরে গুহার মানচিত্র তৈরি করা হয়েছে।
যদিও এই স্থানটি প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল ৩০ বছর আগে, জানান হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এফ্রেম কোহেন।
রেডিওকার্বন ডেটিং বলছে, সাত হাজার বছরের পুরনো গুহা এটি। নুনের সঙ্গে আকরিক আর জল মিশে তৈরি হয়েছে এটি, বলেন গবেষকরা।
সোদম পাহাড়কে একটি বিশাল নুনের স্তূপ বলা যেতে পারে। জলে নুন গলে দীর্ঘ দিন ধরে জমে জমে ডেড সি বা মৃত সাগরের দিকে গুহার রূপ নিয়েছে।
মরুভূমি থেকে উড়ে আসা ধুলোর কারণে গুহার অভ্যন্তরে তৈরি হয়েছে বিচিত্র নকশা। বিশালাকার নুনের ফলক, ধুলো আর খনিজ পদার্থ মিলে অসাধারণ ভাস্কর্য তৈরি হয়েছে গুহায়।