ছবি: সংগৃহীত।
স্থানীয় সংবাদ পরিবেশনের জন্য এ বার থেকে গুগল-ফেসবুকের মতো বহুজাতিক সংস্থাগুলিকে সেই সংবাদ প্রকাশকদের অর্থ দিতে হবে। দেশের গণমাধ্যম সংক্রান্ত এক ঐতিহাসিক আইনে এমনটাই ‘ফরমান’ জারি করেছে অস্ট্রেলিয়া। বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে ওই আইন পাশ হয়েছে।
অস্ট্রেলীয় পার্লামেন্টে এই আইনের প্রস্তাবনার সময় থেকেই তা নিয়ে ঘোরতর আপত্তি জানিয়েছিল গুগল-ফেসবুকের মতো বহুজাতিক সংস্থাগুলি। এমনকি, গত বৃহস্পতিবার থেকে অস্ট্রেলিয়ায় স্থানীয় সংবাদ পরিবেশনও বন্ধ করে দিয়েছিল ফেসবুক। ওই প্রস্তাবিত বিলের বিরুদ্ধেই যে এই পদক্ষেপ, সে সময় তা-ও জানানো হয়েছিল সংস্থার তরফে। যদিও মঙ্গলবার থেকে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় ফেসবুক।
নয়া আইন নিয়ে শুরু থেকে সরব হয়েছিল গুগলও। তবে ওই বহুজাতিকদের বিরোধিতা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার অতি সহজেই ওই আইন পার্লামেন্টে পাশ হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এর ফলে বিশ্ব জুড়েই একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করল অস্ট্রেলিয়ার স্কট মরিসন সরকার।
অস্ট্রেলিয়ার নতুন আইনের ফলে গুগল-ফেসবুকের মতো সংস্থাগুলিকে নিজেদের ওয়েবসাইটে স্থানীয় সংবাদ পরিবেশেনের জন্য লক্ষ লক্ষ ডলার ব্যয় করতে হবে। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রক সংস্থার দাবি, নিজেদের পাতায় স্থানীয় সংবাদ পরিবেশন করে তারা অনলাইনে বিজ্ঞাপন বাবদ লক্ষ লক্ষ অর্থ আয় করলেও সেই লভ্যাংশ পায় না দেশের প্রকাশকেরা। অথচ, বিজ্ঞাপন থেকে অস্ট্রেলীয় সংবাদ প্রকাশকদের আয় কমছে। অর্থাৎ, যারা সেই সংবাদ আসলে প্রকাশ করছে, তারা সেই সংবাদ থেকে অর্থ পাচ্ছে না। অথচ সেই সংবাদ নেটমাধ্যমে ফেসবুক বা গুগল তুলে দিয়ে মুনাফা করছে।
এই দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য রাখতেই নয়া আইন করা হয়েছে বলে দাবি অস্ট্রেলীয় সরকারের। যদিও মরিসন সরকার-ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম তথা রুপার্ড মার্ডক সাম্রাজ্যকে সুবিধা দেওয়ার জন্যই এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন সমালোচকদের একাংশ।
নতুন আইন পাশের পর তা ঠেকাতে গুগল-ফেসবুকের মতো সংস্থাগুলির কাছে আরও ২ মাস সময় রয়েছে। তবে ইতিমধ্যেই এই আইনের প্রতিবাদে স্থানীয় সংস্থাগুলির সঙ্গে নিজেদের চুক্তি স্থগিত রেখেছে গুগল। এর মধ্যে রুপার্ড মার্ডকের সংস্থা নিউজ কর্পোরেশন এবং নাইন এন্টারটেনমেন্ট রয়েছে। তবে এ-ও শোনা যাচ্ছে, ওই সংস্থাগুলি হয়তো নয়া আইন মেনে দ্রুত চুক্তি করে ফেলবে।