ভারতের নৌসেনা প্রধানের সঙ্গে জার্মানির সদ্য প্রাক্তন নৌসেনা প্রধান। ছবি— পিটিআই।
দিল্লিতে একটি আলোচনাসভায় রাশিয়া-ইউক্রেন সম্পর্ক ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে তুমুল ডামাডোল। পরিণতিতে ইস্তফা দিলেন জার্মানির নৌ সেনা প্রধান কে আচিন শোনবাখ। গত শুক্রবার দিল্লিতে তিনি বলেছিলেন, ইউক্রেন কোনওদিন ক্রিমিয়া ফিরে পাবে না এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে সম্মান দেওয়া উচিত।
এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন নৌ সেনা প্রধান। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে বলেছি, আমাকে সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে। মন্ত্রী আমার আবেদন মঞ্জুর করেছে।’’ দিল্লিতে শনিবার নিজের মন্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘ভারতে আমার করা অনভিপ্রেত কিছু কথা আমার কার্যালয়ের উপর চাপ তৈরি করছে। তাই ইস্তফা দেওয়াই উপযুক্ত বলে মনে করছি।’’
মনোহর পর্রীক্কর ইন্সস্টিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালিসিস (এমপি-আইডিএসএ)-এ একটি আলোচনা সভায় জার্মানির নৌ সেনা প্রধান বলেছিলেন, রাশিয়ার কাছ থেকে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া ফিরে পাওয়ার আর কোনও আশাই নেই। রাশিয়ার ইউক্রেনের উপর আক্রমণ করার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেছিলেন, আপনারা কি সত্যিই মনে করেন ওইটুকু ভূখণ্ডের জন্য রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করবে! এরকম হওয়ার কোনও কারণই নেই। ভ্লাদিমির পুতিন আসলে একটু সম্মান চান। তার পরই তাঁর সংযোজন, আমিও মনে করি ওঁকে একটু সম্মান করা উচিত।
এ দিকে জার্মানির সঙ্গে ইউক্রেনের কূটনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত ভাল। এই পরিস্থিতিতে জার্মানির নৌ সেনা প্রধানের এমন মন্তব্য নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে যায়। দিল্লিতে করা মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে জার্মান রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠায় ইউক্রেনের সরকার। তাঁকে দ্রুত এই বিষয়ে জার্মানির দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করতে বলা হয়। তোলপাড় পড়ে যায় বার্লিনেও। তার পর শনিবারই নিজের মন্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানান নৌ সেনা প্রধান।