ছবি রয়টার্স।
আনুষ্ঠানিক বৈঠক শুরু হওয়ার কথা আগামী কাল। কিন্তু জি-৭-এর মঞ্চ থেকে আজই করোনা অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জোরালো বার্তা দিলেন জো বাইডেন এবং বরিস জনসন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী একযোগে জানিয়েছেন, বিশ্বের অনুন্নত দেশগুলির মানুষের কাছে প্রতিষেধক পৌঁছে দেওয়ার জন্য ১০০ কোটি ডোজ়ের ব্যবস্থা করবেন তাঁরা। এর মধ্যে শুধুমাত্র ৫০ কোটি ডোজ় দেবে আমেরিকা একাই। ব্রিটেন আপাতত ১০ কোটি ডোজ় দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। জি-৭ গোষ্ঠীর অন্য দেশগুলি বাকি ডোজ়ের ব্যবস্থা করবে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আজ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘ব্রিটেনের টিকাকরণ প্রক্রিয়া খুবই সাফল্য পেয়েছে। তারই ফল হিসেবে আমরা আমাদের দেশের অতিরিক্ত প্রতিষেধক এমন দেশগুলির কাছে পৌঁছে দিতে চাই, যারা এখনও পর্যন্ত করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এই অন্যতম অস্ত্র জোগাড় করে উঠতে পারেনি।’’ এ নিয়ে সদর্থক বার্তা দিয়েছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। তিনি বলেছেন, ‘‘এটা আসলে মানবতার প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা। আমাদের শুধু দেখতে হবে কত বেশি সংখ্যক প্রাণ আমরা বাঁচাতে পারি।’’
গত কাল ব্রিটেনের মাটিতে পা রেখেছেন সস্ত্রীক বাইডেন। সস্ত্রীক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের ছবি ইতিমধ্যেই দেখে ফেলেছে গোটা বিশ্ব। আজ ছিল একে অপরকে উপহার দেওয়ার পালা। সাইকেলপ্রেমী বরিসের জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট এনেছেন তাঁর দেশে তৈরি একটি বাইসাইকেল ও একটি হেলমেট। বরিসের সদ্য বিবাহিত স্ত্রী ক্যারি জনসনকে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট দম্পতি উপহার দিয়েছেন সে দেশের সেনাদের স্ত্রীদের হাতে বানানো একটি চামড়ার ব্যাগ এবং সিল্কের স্কার্ফ।
বাইডেন দম্পতিকে দেওয়া উপহারে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের ছোঁয়া রেখেছেন বরিস। আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে তিনি একটি সাদা-কালো ম্যুরাল উপহার দিয়েছেন। ছবিটি আসলে ক্রীতদাসপ্রথার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মুখ আমেরিকান সমাজসেবী ফ্রেডরিখ ডগলাসের। যিনি এক সময়ে ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ড সফর করেছিলেন।
সংবাদমাধ্যমে চর্চা চলছে জিল বাইডেনের পরা কালো জ্যাকেটটি নিয়েও। গত কাল ওই জ্যাকেট পরেই সস্ত্রীক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছবি তুলেছিলেন আমেরিকান ফার্স্ট লেডি। কালো জ্যাকেটের উপরে রুপোলি রঙে লেখা ‘লাভ’ শব্দটি নজর কেড়েছে অনেকেরই। তাঁর সঙ্গে তুলনা শুরু হয়েছে প্রাক্তন আমেরিকান ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পেরও। ২০১৮ সালে শরণার্থী শিশুদের একটি শিবিরে মেলানিয়া একটি জ্যাকেট পরে গিয়েছিলেন, যার পিঠে লেখা ছিল, ‘আই রিয়েলি ডোন্ট কেয়ার। ডু ইউ?’ সেই সময়ে প্রচুর সমালোচনা হয়েছিল জ্যাকেটে লেখা ওই কথাগুলো নিয়ে। প্রথমে ওটা নিছকই কথার কথা বলে উড়িয়ে দিলেও পরে মেলানিয়া নিজে স্বীকার করেছিলেন, বামপন্থী সমালোচকদের জবাব দিতেই ওই জ্যাকেট পরেছিলেন তিনি। বর্তমান আমেরিকান ফার্স্ট লেডি অবশ্য জানিয়েছেন, আমেরিকা থেকে এক রাশ ভালবাসা নিয়ে ব্রিটেনে পাড়ি দিয়েছেন তাঁরা। তার প্রতিচ্ছবিই দেখা গিয়েছে তাঁর জ্যাকেটে।