ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি ২০ শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং অন্য রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে ‘তামান হুতান রায়া নুগুরা রাই’ ম্যানগ্রোভ অরণ্য পরিদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নতুন গাছের চারাও রোপণ করলেন তাঁরা। পরিবেশ রক্ষায় ম্যানগ্রোভ অরণ্যের অবদানের কথা বিবেচনা করে ভারত, ইন্দোনেশিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমির শাহির যৌথ উদ্যোগে ‘ম্যানগ্রোভ অ্যালায়েন্স ফর ক্লাইমেট’ গড়ে উঠেছে। পিটিআই
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বলা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যুদ্ধ সংক্রান্ত আপ্তবাক্যটির প্রতিধ্বনি করা হল বালির জি-২০ ঘোষণাপত্রে। বলা হল, ‘আজকের সময় অবশ্যই যুদ্ধের নয়।’
ভারতের দাবি, বালির ঘোষণাপত্রে কুড়িটি রাষ্ট্রকে এক মাথায় আনার পিছনে মোদী সরকারের কূটনীতি অন্যতম ভূমিকা পালন করছে। তার প্রমাণ মোদীর মন্তব্য এবং অবস্থানকেই বিবৃতিতে ব্যবহার করা। বিদেশ সচিব বিনয় কোয়াত্রার কথায়, “প্রধানমন্ত্রীর যুদ্ধ সংক্রান্ত বার্তা এবং আলোচনার রাস্তায় সংঘাত মেটানোর আহ্বান সমস্ত সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে অনুরণিত হয়েছে। তা বিভিন্ন দেশের মতভেদ মেটাতে সক্ষম হয়েছে এবং ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে সাহায্য করেছে।”
এটা ঘটনা যে জি-২০ বালি ঘোষণাপত্র নিয়ে দু’টি মেরুতে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল সদস্য রাষ্ট্রগুলি। চিন, সৌদি আরব, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়ার মতো কিছু দেশ দাবি জানিয়েছিল, রাশিয়া প্রশ্নে যেন বিবৃতিতে কঠোর অবস্থান নেওয়া না হয়। অন্য দিকে পশ্চিমি দেশগুলির ব্লকের চাপ ছিল, রাশিয়ার তীব্র নিন্দা করার। ভারতের পক্ষ থেকে চিন, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিলের সুরে জানানো হয়েছিল, সংঘাতের উল্লেখ থাকলেও তা নিয়ে যেন অতিরিক্ত ভর্ৎসনা করা না হয়।
কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের প্রবল নিন্দা রয়েছে আজ প্রকাশিত এই ঘোষণাপত্রে। বলা হয়েছে, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ আন্তর্জাতিক অর্থনীতিকে আরও খারাপ জায়গায় নিয়ে গিয়েছে। এই নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা আমাদের জাতীয় অবস্থানেরই পুনরাবৃত্তি করেছি যা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ এবং সাধারণ সম্মেলনে করা হয়েছিল। সেখানে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসনের কড়া ভাষায় নিন্দা করা হয়। দাবি করা হয়, কোনও শর্ত ছাড়াই ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে সেনাকে ফিরিয়ে নিতে হবে। বেশির ভাগ সদস্য রাষ্ট্র যুদ্ধের কঠোর নিন্দা করে জানিয়েছে এর ফলে মানুষের দুর্দশা বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অর্থনৈতিক অস্থিরতাও। বাড়ছে মূল্যবৃদ্ধি, ব্যাহত হচ্ছে আর্থিক বৃদ্ধি ও গণবণ্টন ব্যবস্থা। জ্বালানি এবং খাদ্যের অভাব বাড়ছে। এই পরিস্থিতি এবং নিষেধাজ্ঞা নিয়ে অন্য মত এবং মূল্যায়নও রয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক আইন এবং বহুপাক্ষিক ব্যবস্থাকে মান্যতা দিয়ে শান্তি এবং সংহতি রক্ষা জরুরি। পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দেওয়া কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সংঘাতের মীমাংসায় কূটনীতি এবং আলোচনাই প্রধান উপায়। এই সময় অবশ্যই যুদ্ধের নয়।’