১৯১২ সালে ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে যাচ্ছিল টাইটানিক। ফাইল চিত্র।
ডুবে যাওয়ার পর প্রায় ১১৩ বছর কেটে গিয়েছে। অতলান্তিকে ডুবে যাওয়ার পর টাইটানিকের পূর্ণাঙ্গ ছবি কখনও প্রকাশ্যে আসেনি। এ বার সেই ছবিই প্রকাশ্যে আনলেন এক দল গবেষেক। এই ছবি পাওয়ার জন্য ছ’সপ্তাহ উত্তর অতলান্তিকে কাটিয়েছে ওই গবেষক দল।
৭ লক্ষ ছবিকে একত্রিত করে টাইটানিকের পূর্ণাঙ্গ ছবি বানিয়েছে ওই গবেষক দলটি। জাহাজের ছবি তোলার জন্য দু’টি সাবমার্সিবল (জলের তলায় কর্মক্ষম দূরনিয়ন্ত্রিত যন্ত্র) পাঠানো হয়েছিল। যেগুলি রিমোটের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তথ্যচিত্র নির্মাতা অতলান্তিক প্রোডাকশনস-এর প্রধান অ্যান্থনি গেফেন জানিয়েছেন, এর আগেও ছবি তোলা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলি ততটা স্পষ্ট ছিল না। গবেষকরা সম্প্রতি যে ছবি প্রকাশ্যে এনেছেন, সেই ছবি অনেক স্পষ্ট। তা ছাড়া আগের ছবিগুলি জাহাজের একটি নির্দিষ্ট দিকেরই ছিল। এ বার পূর্ণাঙ্গ ছবি প্রকাশিত হল।
টাইটানিকের পূর্ণাঙ্গ ছবি। ছবি: সংগৃহীত।
গেফেন আরও জানিয়েছেন, বর্তমানে যে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, সেই ছবিগুলি এতটাই স্পষ্ট যে, জাহাজের প্রপেলারে থাকা সিরিয়াল নম্বরও পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। টাইটানিকের ছবি তোলার জন্য অতলান্তিক প্রোডাকশনস-এর সঙ্গে কাজ করেছে গভীর সমুদ্রে গবেষণাকারী সংস্থা ম্যাগেলান লিমিটেডও। এই অভিযানের নেতা গেরহার্ড সিফার্ট বিবিসি-কে জানিয়েছেন, ছবি তোলা হলেও কোনও কিছু স্পর্শ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। গবেষকরা জানিয়েছেন, যাত্রীদের ব্যক্তিগত কিছু জিনিস যেমন ঘড়ি, জুতোও ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। পূর্ণাঙ্গ ছবি প্রকাশ্যে আসায় আরও নতুন কিছু তথ্য জানা যাবে বলে আশাবাদী গবেষকরা। তবে এখনও অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে টাইটানিককে ঘিরে। সেই রহস্য উন্মোচনেরও চেষ্টা করা হবে বলে দাবি গবেষকদের।
১৯৮৫ সালে প্রথম টাইটানিককে কানাডা উপকূল থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রের ১২,৫০০ ফুট গভীরে পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু পুরো জাহাজের ছবি তোলা সম্ভব হয়নি সেই সময়। তাই নতুন ছবি প্রকাশ্য আসায় বিলাসবহুল এই জাহাজের কাহিনি নিয়ে কৌতূহল বাড়ছে। ১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন থেকে যাত্রা শুরু করেছিল টাইটানিক। গন্তব্য ছিল আমেরিকার নিউ ইয়র্ক। ১৫ এপ্রিল উত্তর অতলান্তিকে নিউ ফাউন্ডল্যান্ডের কাছে হিমশৈলে ধাক্কা লেগে জাহাজটি ডুবে যায়। সেই ঘটনায় দেড় হাজার যাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল।