ফিরোজা আজিজ।
মাসখানেক আগে মেকআপ টিউটোরিয়াল ভিডিয়োর আড়ালে চিনের উইঘুর মুসলিমদের দুর্দশার কথা বলে খবরের শিরোনামে এসেছিল এক মার্কিন কিশোরী। ভাইরাল হয় সেই ভিডিয়োটি। এ বার একই পন্থায় ভারতের নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তির্যক ভিডিয়ো প্রকাশ করল ফিরোজ়া আজ়িজ় নামে সেই আফগান-মার্কিন কিশোরী। সিএএ নিয়ে তার এই ‘মেকআপ’ ভিডিয়োটি ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারে মঙ্গলবারই প্রকাশ করেছে ফিরোজ়া। ভাইরাল হয়েছে সেটিও।
আগের ভিডিয়োটির মতো এটির শুরুতে মেকআপ নিয়েই কথা বলতে শোনা যায় ফিরোজ়াকে। তবে ‘ময়শ্চারাইজ়িং রুটিন’ নিয়ে কথা শুরু হলেও ক্রমে তা চলে আসে নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) প্রসঙ্গে। এই আইন ভারতীয় মুসলিমদের পক্ষে কতটা বিদ্বেষমূলক, তা নিয়েও মন্তব্য করতে শোনা যায় বছর সতেরোর ওই কিশোরীকে। তার কথায়, ‘‘এই আইনের অন্তর্গত মূলত মুসলিমদের ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়া থেকে বিরত করা হচ্ছে। মুসলিমদের নিজেদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবে প্রমাণ দিতে প্রমাণপত্র দেখাতে বাধ্য করা হচ্ছে।’’ এই আইন ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী’ ও ‘নীতিবিরুদ্ধ’, দাবি ফিরোজ়ার। ভিডিয়োয় সিএএ-র মতো বিষয় নিয়ে কিশোরীর সচেতনতা বাড়ানোর এই চেষ্টাকে সাধুবাদ জানান অনেকেই। তবে নারীবিদ্বেষী নানা মন্তব্যও উড়ে এসেছে। নিন্দুকদের মধ্যে বেশির ভাগই ভারতীয় পুরুষ। মন্তব্যে যৌন নিগ্রহের হুমকিও দেওয়া হয়েছে ফিরোজ়াকে।
তবে তাতে চুপ নেই ফিরোজ়া। ইনস্টাগ্রামে সে লিখেছে, ‘‘ধর্মের জোরে কারও ভারতীয় হওয়া বেড়ে বা কমে যায় না। এই আইন বিদ্বেষমূলক এবং ভারতীয় নাগরিকদের বিরোধী। যখন বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করছি তখনই এই আইন নিয়ে প্রতিবাদ করায় অত্যাচারিত হচ্ছেন অনেকে। পুলিশি সন্ত্রাসের বহর বাড়ছে, গুরুতর পর্যায় পৌঁছে গিয়েছে।’’ পাশাপাশি তার আর্জি, ‘‘বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা বাড়ান, চুপ করে থাকবেন না।’’
অতীতে চিনের অভ্যন্তরীণ ক্যাম্পে কয়েক লক্ষ উইঘুর মুসলিমকে আটকে রেখে অত্যাচার চালানো নিয়ে ‘মেকআপ ভিডিয়ো’র আড়ালেই সরব হয় ফিরোজ়া। সে বার আইল্যাশ কার্লার ব্যবহার করতে করতে ওই কারাগারের ভিতরের ঘটনার বিবরণ দিয়েছিল সে। টিকটকে সেটিও প্রচুর শেয়ার হয়। চিনের ওই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে পরে অবশ্য ভিডিয়োটি মুছে দেওয়া হয়।