গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণার পরেই প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের তৈরি রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করল প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকার। সোমবার রাতে দলের সদর দফতরে হানা দিয়ে আটক করা হল কয়েক জন নেতানেত্রীকে।
রাজধানী ইসলামাবাদের পাশাপাশি লাহোর, করাচি-সহ বিভিন্ন শহরে ইমরানের দলের দফতরগুলিও সিল করেছে পাক সরকার। গত সপ্তাহে শরিফের সরকারের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লা তারার জানিয়েছিলেন, ইমরানের দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে চলেছেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে বিদেশি অনুদান পাওয়া, ৯ মে হিংসায় সরাসরি জড়িত থাকা, সাইফার (রাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফাঁস) মামলা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সব তথ্যপ্রমাণ মিলেছে, আমরা বিশ্বাস করি, তা পিটিআই-কে নিষিদ্ধ করার পক্ষে যথেষ্ট।’’
এর পরে সরকারি ভাবে পিটিআই-কে নিষিদ্ধ করার সরকারি ঘোষণা হয়। ইমরানের দলের স্বীকৃতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলাকালীনই পাক সরকারের এই পদক্ষেপ ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। একাধিক মামলায় অভিযুক্ত ইমরান বর্তমানে আদিয়ালা জেলে বন্দি। ইসলামাবাদ পুলিশ মঙ্গলবার জানিয়েছে, তাঁর দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রউফ হাসান-সহ ১০ জন নেতানেত্রীকে আটক করা হয়েছে।
শাহবাজ সরকারের এই পদক্ষেপের জেরে প্রায় দু’দশক পরে আবার পাকিস্তানে শাসক বনাম সুপ্রিম কোর্ট সংঘাতের আবহ তৈরি হতে পারে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন। প্রসঙ্গত, চলতি মাসের গোড়ায় সে দেশের শীর্ষ আদালত কার্যত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত খারিজ করে জানিয়েছিল, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরানের পিটিআই দলগত ভাবেই পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ২৩টি সংরক্ষিত আসন পাওয়ার যোগ্য।
ওই মামলায় নির্বাচন কমিশনের যুক্তি ছিল, আনুপাতিক ভোটের হার অনুযায়ী শুধুমাত্র স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলিরই মহিলা এবং সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত ৭০টি আসন প্রাপ্য। পিটিআইয়ের স্বীকৃতি বাতিল হওয়ায় তারা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পেতে পারে না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের ১৩ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ সরাসরি সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। ঘটনাচক্রে, তার পরেই পিটিআই-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে পাক সরকার।