US

অনলাইন ক্লাস করা বিদেশি পড়ুয়াদের আমেরিকা ছাড়তে হবে, জানাল ট্রাম্প সরকার

করোনা সঙ্কটে এই মুহূর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়েই অনলাইন ক্লাস হচ্ছে, বেশ কিছু দিন ধরে যার বিরোধিতা করছিলেন ট্রাম্প।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২০ ১২:৪১
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

মার্কিন নাগরিকদের জন্য কর্মসংস্থান করতে এইচ ওয়ান বি ভিসার উপর কোপ পড়েছে আগেই। এ বার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠরত বিদেশি পড়ুয়াদের নিয়েও কড়া অবস্থান নিল ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার। জানিয়ে দিল, এফ-১ এবং এম-১ ভিসা নিয়ে পড়তে গিয়ে এই মুহূর্তে যাঁরা অনলাইন ক্লাস করছেন, তাঁদের আমেরিকায় থাকার ভিসা প্রত্যাহার করা হবে। নিজ নিজ দেশে ফিরে গিয়ে অনলাইনে ক্লাস করতে হবে ওই সমস্ত পড়ুয়াদের।

Advertisement

করোনা সঙ্কটের জেরে এই মুহূর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়েরই অনলাইন ক্লাস হচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে তার বিরুদ্ধে সওয়াল করে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তরতর করে বেড়ে চললেও, আসন্ন শরতের মধ্যে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আগের মতো ক্যাম্পাসে ক্লাস শুরু করতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এমন পরিস্থিতিতে সোমবার মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) দফতরের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘‘এফ-১ এবং এম-১ ভিসা নিয়ে এ দেশে থেকে সম্পূর্ণ অনলাইন কোর্স করা যাবে না। অনলাইনে পড়তে হলে এখান থেকে চলে যেতে হবে। নয়ত এমন কোনও জায়গায় নাম নথিভুক্ত করাতে হবে, যেখানে সশরীরে উপস্থিত থেকে ক্লাস করা যাবে। তা নইলে ওই সমস্ত পড়ুয়াদের ভিসা প্রত্যাহার করা হবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ডোভালের ফোনে অগ্রগতি, প্রশ্ন রেখেই সেনা সরাল ভারত-চিন​

আসন্ন শরতেও যদি করোনা সঙ্কট না কাটে, তা হলে পঠন পাঠন কী ভাবে হবে, অধিকাংশ মার্কিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই এখনও পর্যন্ত তা ঘোষণা করেনি। তবে হার্ভার্ড-সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ক্লাস নেওয়া চালু রাখতে আগ্রহী। হার্ভার্ডের তরফে জানানো হয়েছে, ৪০ শতাংশ পড়ুয়াকেই ক্যাম্পাসে ফিরে আসার অনুমতি দেবে তারা। তবে ক্যাম্পাসে ফিরলেও, তাঁদের ক্লাস করতে হবে অনলাইনেই।

কিন্তু আইসিই-র তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ক্লাস নেবে, সেখানকার বিদেশি পড়ুয়াদের মার্কিন মুলুকে পা রাখতে দেওয়া হবে না। তাদের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনা শুরু হয়েছে। মার্কিন মুলুকের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্টদের নিয়ে গঠিত আমেরিকান কাউন্সিল অব এডুকেশন জানায়, ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প সরকার। পড়ুয়াদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে যেখানে ধীরে সুস্থে এগনোর কথা ভাবা হচ্ছে, এই ঘোষণায় খামোকা আতঙ্ক ছড়াবে।

ট্রাম্প সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেন সেনেটর তথা আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী বার্নি স্যান্ডার্সও। তাঁর কথায়, ‘‘বিদেশি পড়ুয়াদের শর্ত দেওয়া হচ্ছে, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাসে যাও নইলে দেশ ছেড়ে বেরিয়ে যাও। ট্রাম্পের এই গোঁয়ার্তুমির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে আমাদের। সমস্ত পড়ুয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’’

আরও পড়ুন: টিকটক-সহ বিভিন্ন চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছে আমেরিকা: পম্পেয়ো​

ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন (আইআইই) প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-’১৯ শিক্ষাবর্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১০ লক্ষের বেশি বিদেশি পড়ুয়া ছিলেন, যা কিনা সে দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হওয়া মোট পড়ুয়াদের ৫.৫ শতাংশ। এই বিদেশি পড়ুয়া মারফত ২০১৮ সালে সে দেশের সরকার ৪৪৭০ কোটি ডলার আয় করে বলেও জানিয়েছে তারা। উচ্চশিক্ষার জন্য চিন থেকেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পড়ুয়া মার্কিন মুলুকে পাড়ি দেন। তার পরে ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব এবং কানাডার মতো দেশ রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement